পুতিনের সহযোগীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিনের ঘনিষ্ঠ ২৪ জন রুশ নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, রাশিয়ার কৃত ‘নিন্দনীয়’ কাজের শাস্তিস্বরূপ ওই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে তারা। রয়টার্স লিখেছে, সম্প্রতিক রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে কড়া পদক্ষেপ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রভাবিত করার অভিযোগ তো আছেই, তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ যুক্তরাজ্যে অভিযোগ করেছে, সালসবুরিতে সাবেক রুশ গুপ্তচরকে রাসায়নিক প্রয়োগে হত্যা করার চেষ্টায় রাশিয়াই জড়িত।
যদিও রাশিয়ার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখনই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ভাবছে না দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে, রাশিয়ার সরকারি মহলের ঘনিষ্ঠ ১২ জন ব্যক্তি এবং তাদের মালিকানাধীন বা তারা পরিচালনা করেন এমন ১২টি প্রতিষ্ঠান। তাছাড়াও রয়েছেন, ১৭ জন জ্যেষ্ঠ রুশ সরকারি কর্মকর্তা। নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি যেমন বাজেয়াপ্ত করা হবে তেমনি তাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা করাও নিষেধ।
নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়ার সময়ে ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তা ম্নুচিন বলেছেন, রাশিয়া তাদের দেশের সরকারের ঘনিষ্ঠ মহলের সুবিধা নিশ্চিত করতে ভারসাম্যহীন পদক্ষেপ নেয়। তাছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দেশটি ‘নিন্দনীয়’ কাজ করেছে। তারা ক্রাইমিয়া দখল করেছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সহিংসতায় উস্কানি দিয়েছে, সিরিয়া গৃহযুদ্ধে অস্ত্র ও বোমা সরবরাহ করেছে। রাশিয়া সাইবার হামলার সাথেও জড়িত।
যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের চাপে নেওয়া ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা ওলেগ ডেরিপাস্কা ও সুলেমান কেরিমভের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে। ওলেগ ডেরিপাস্কা প্রভাবশালী অ্যালুমিনিয়াম ব্যবসায়ী। আর সুলেমান কেরিমভের পরিবার রাশিয়ার সবচেয়ে বড় স্বর্ণ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পলিউসের মালিক।
রয়টার্স লিখেছে, নির্বাচন প্রভাবিত করতে ভুয়া খবর ছড়ানোর শাস্তি হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস এই নিষেধাজ্ঞা জারি করতে বাধ্য করেছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ মস্কোর লাগাতার করতে থাকা ‘নিন্দনীয় কাজের’ জবাবে নেওয়া পদক্ষেপ হিসেবে দেখাতে চেয়েছে ওই নিষেধাজ্ঞাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এই নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতিতে চাপ পড়তে পারে। বিশেষ করে রাশিয়ার অ্যালুমিনিয়াম শিল্প, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং জ্বালানি খাত ধাক্কা খাবে, যা পুতিন ও তার ঘনিষ্ঠদের যুক্তরাষ্ট্রের অসন্তোষের বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দেবে। নিরাপত্তা পরিষদে নিযুক্ত রাশিয়ার কর্মকর্তা নিকোলাই পাত্রুশেভ বলেছেন, ওই নিষেধাজ্ঞার কারণে এখনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ভাবছে না।