উত্তর কোরিয়া ধ্বংসে প্রস্তুত এক লাখ সেনা
উত্তর কোরিয়াকে নিশ্চিহ্ন করতে এক লাখ মার্কিন সেনা প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। পিয়ংইয়ংয়ের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ রুখতে এসব সেনা সদস্য সতর্ক প্রহরায় রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, হাওয়াই ও মার্কিন নিয়ন্ত্রণাধীন গুয়াম দ্বীপে মজুদ রয়েছে। সামরিক আদেশ পাওয়ামাত্রই হামলা চালাবে।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক বাতিলের পর সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে এমন রণসজ্জায় যুক্তরাষ্ট্র।
পেন্টাগনের যুগ্ম পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেনেথ ম্যাককেনজি বলেন, উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসক কিম জং উনের যে কোনো আক্রমণাত্মক প্ররোচনা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র সবসময় সজাগ। খবর রয়টার্সের।
বৃহস্পতিবার সকালে কিমের সঙ্গে আগামী ১২ জুনের পরিকল্পিত বৈঠক বাতিল করেন ট্রাম্প।
এ ঘোষণা কিছুক্ষণ পর ট্রাম্প বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস ও পেন্টাগনের যুগ্ম পরিচালকের কাছ থেকে সেনা প্রস্তুত থাকার বার্তা পাওয়া গেছে। এর আগে উত্তর কোরিয়াকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন গুয়াম দ্বীপে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হামলা চালানোর হুমকির প্রতিক্রিয়ায় এ হুশিয়ারি দেন তিনি। ট্রাম্প বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়া আগুন ও দাবানল দেখবে, যা বিশ্ব কখনও দেখেনি।
কিন্তু সেসময় কথার লড়াইয়ে সীমাবদ্ধ ছিলেন ট্রাম্প ও কিম।
পেন্টাগনের তথ্যানুসারে, উত্তর কোরিয়াকে মোকাবেলায় দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, হাওয়াই সেনাঘাঁটি ও গুয়ামে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। সেনা সদস্যের পাশাপাশি ৭০টি এফ-১৬, ১০টি এ-১০ যুদ্ধবিমানসহ শতাধিক বিমান রণসজ্জায় সজ্জিত রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সাড়ে ৩৭ হাজার সেনা, এফ-১৬ এবং এ-১০ যুদ্ধবিমানসহ মার্কিন বিমান বাহিনীর ৭ম ব্যাটালিয়ন ও থাড ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রস্তুত রয়েছে।
জাপানে সাড়ে ৪৭ হাজার সেনা, যুক্তরাষ্ট্রের ৭ম নৌবহর, এফ-১৫, এফ-১৬, এফ-১৮ বিমানসহ মার্কিন বিমান বাহিনীর ৫ম ব্যাটালিয়ন পূর্ণ রণসজ্জায় রয়েছে। হাওয়াই দ্বীপের সেনাঘাঁটিতে ৪০ হাজার সেনা, ৫টি বিমানবাহী রণতরীসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৩য় নৌবহর যুদ্ধসাজে রয়েছে।
গুয়াম ঘাঁটিতে ৭,০০০ সেনা, ৪টি পারমাণবিক ডুবোজাহাজ, বি-৫২ বোমারু বিমান, বি-১বি ল্যান্সার বোম্বারস ও বি-২ স্টিল’ বোম্বারস মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা পাওয়া অন্যতম বন্ধুরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়াও তাদের সেনা প্রস্তুত রেখেছে।
সামরিক সক্ষমতায় উত্তর কোরিয়াও কম পিছিয়ে নেই। দেশটির সামরিক বাহিনীর মোট সদস্য ১১ লাখ ৯০ হাজার। এর মধ্যে সেনা সদস্য ১০ লাখ ২০ হাজার, নৌসেনা ৬০ হাজার, বিমান বাহিনীর সদস্য ১ লাখ ১০ হাজার। এছাড়া আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য রয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার।
দেশটির রিজার্ভ ফোর্সের সশস্ত্র সদস্য ৬ লাখ এবং আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য ৫৭ লাখ। উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তিমত্তা বিবেচনায় রণসজ্জা প্রস্তুত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাককেনজি বলেন, পেন্টাগন যে কোন মুহূর্তে হামলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র দানা হোয়াইট সাংবাদিকদের বলেন, আজ রাতেও আমরা হামলা চালাতে প্রস্তুত।