জনগণের উদ্দেশ্যে এই সম্মাননা উৎসর্গ করছি : প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে মানবিক ও দায়িত্বশীল নীতির জন্য নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মর্যাদাপূর্ণ ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ এবং ২০১৮ স্পেশাল ডিস্টিংকশন অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং অ্যাচিভমেন্ট’ প্রদান করা হয়েছে।
বৈশ্বিক সংবাদ সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস) প্রধানমন্ত্রীকে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড এবং নিউইয়র্ক, জুরিখ ও হংকং ভিত্তিক একটি অলাভজনক ফাউন্ডেশনের নেটওয়ার্ক গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন ‘২০১৮ স্পেশাল ডিস্টিংকশন অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং অ্যাচিভমেন্ট’ সম্মাননা প্রদান করে।
পদক গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিকের আশ্রয়ে হৃদয় ও ঘরবাড়ি উন্মুক্তকারী আমার দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে এই সম্মাননা উৎসর্গ করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি বিশ্বের নিপীড়িত ও বাস্তুচ্যুত মানুষদের প্রতি মানবিকতা প্রদর্শন সকল দায়িত্বশীল জাতির দায়িত্ব।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আলাদা দু’টি অনুষ্ঠানে এই অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। ডাইরেক্টর জেনারেল অব ইন্টারন্যাশাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন অ্যাম্বাসেডর উইলিয়াম লুসি সুইং’র কাছ থেকে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন তিনি।
এতে কো-অডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের জাতিসংঘ আন্ডার সেক্রেটারি মার্ক লোকক, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক কানাডার মন্ত্রী মারী-ক্লাউড বিবেউ বক্তৃতা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইপিএস ইন্টারন্যাশনালের মহাপরিচালক ফারহানা হক রহমান।
প্রধানমন্ত্রীকে তার অসাধারণ নেতৃত্বে জন্য গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশনের বার্ষিক অ্যাওয়ার্ড ডিনারে সংস্থাটির অবৈতনিক প্রেসিডেন্ট ইরিনা বোকেভা ২০১৮ স্পেশাল ডিস্টিংকশন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন।
শেখ হাসিনা ছাড়াও এ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন নাইজারের প্রেসিডেন্ট মাহমাদু ইসুফি, তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট রেজী কেইড এসেবসি ও গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী এলেক্স সিপ্রাস।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের প্রচেষ্টায় বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য নিজস্ব সম্পদ থেকে প্রায় ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েছি। এছাড়া আবাসন গড়ে তোলা ও ভূমি উন্নয়নে অতিরিক্ত প্রায় ৩৮০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছি। আমাদের মনে রাখতে হবে যে এই সংকটের উৎস ভূমি হচ্ছে মিয়ানমার। এ জন্য এর সমাধান মিয়ানমারেই খুঁজতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি যে কারণে আজ এখানে দাঁড়িয়েছি তা কখনও আশা করিনি। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে নির্মম নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন।
প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যার আশু সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের প্রতি তাদের চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ডা. দীপু মনি ও প্রধানমন্ত্রী সফর সঙ্গী অন্যান্য সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।