ওবামাকেয়ার অসাংবিধানিক
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে কার্যকর হওয়া স্বাস্থ্যনীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধানকে অসাংবিধানিক অ্যাখ্যা দিয়েছেন টেক্সাসের একটি আদালত। অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট (ওবামাকেয়ার) নামে পরিচিত ওই নীতিতে স্বাস্থ্যবীমা না করা ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান ছিল।
গত বছর ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন কর ব্যবস্থাপনায় ওই ক্ষতিপূরণের বিধান উঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। এতে কার্যত পুরো ওবামাকেয়ারই অকার্যকর হয়ে পড়েছে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি রাজ্য একত্রে আদালতের দ্বারস্থ হয়।
শুক্রবার টেক্সাসের ফেডারেল আদালতের বিচারক রিড ও’কনর স্বাস্থ্যবীমা না থাকলে শাস্তি হিসেবে অতিরিক্ত কর দেয়ার বিধানকে অসাংবিধানিক অভিহিত করে রায় দেন। এ বিধান ওবামাকেয়ারের ‘অপরিহার্য’ বিষয় হওয়ায় আদতে পুরো অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্টই ‘অসাংবিধানিক’। রায়ে ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এ স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের কর্মকাণ্ডেও উদ্বেগ জানানো হয়। বিচারক ও’কনর আরও বলেন, ‘আগের কংগ্রেস এই অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট চালু করেছিল। এখনকার কংগ্রেস ওই অ্যাক্টটি যে ভিত্তিগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে ছিল, তার শেষটিও কেটে ফেলেছে।’
আদালতের এ রায়কে ‘মার্কিনিদের জন্য চমৎকার সংবাদ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইট বার্তা তিনি লেখেন, ‘ওয়াও, কিন্তু আশ্চর্য হয়নি। ওবামাকেয়ারকে অসাংবিধানিক হিসেবে রুল জারি করেছেন টেক্সাসের সম্মানিত বিচারক। এটা মার্কিনিদের জন্য চমৎকার সংবাদ।’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময়ও ওবামাকেয়ারের ওপর একের পর এক তোপ দেগেছিলেন তিনি।
নির্বাচিত হলে ওবামাকেয়ার বাতিলেরও প্রতিশ্রুতি ছিল তার। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর হোয়াইট হাউস ওবামাকেয়ার বাতিলে বেশ কয়েক দফা উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়। কংগ্রেসের দুই কক্ষে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকার পরও ওবামা আমলে প্রণীত স্বাস্থ্যনীতি বাতিল না হওয়ায় উষ্মাও জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ওবামাকেয়ারের বৈধতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানানোয় নেতৃত্ব দেন দুই রিপাবলিকান টেক্সাসের অ্যাটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটন ও উইন্সকনসিন অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রাড স্কিমেল। টেক্সাসের আদালতের এ রায় মার্কিন সুপ্রিমকোর্টে অবধারিতভাবেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে জানিয়েছে বিবিসি। ওবামাকেয়ার বাতিল হলে লাখ লাখ দরিদ্র মার্কিনি স্বাস্থ্যসেবার আওতা থেকে ছিটকে পড়বেন।
এমন আশঙ্কা জানিয়ে এটির বাতিল ঠেকাতে আইনি পথে হাঁটার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে বেশ কয়েকটি রাজ্যের। নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের নিুকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে ফের ডেমোক্র্যাটদের অধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় ওবামাকেয়ার পরিবর্তনে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন পদক্ষেপও মুখ থুবড়ে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।