১৭ তদন্তের নিশানায় ট্রাম্প
‘ভিত্তিহীন’ সংবাদ পরিবেশনের জন্য প্রায়ই সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন শিবিরকে টুইটারে নিশানা করেন তিনি। কিন্তু এবার তিনি নিজেই নানা তদন্তের মুখে পড়েছেন। বলছিলাম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা। বর্তমানে তার রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত জীবন এবং ব্যবসা নিয়ে মোট ১৭টি আইনি তদন্ত চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার প্রভাব খাটানোর অভিযোগ নিয়ে বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলারের তদন্তের ক্ষেত্র এখন অনেকটাই বিস্তৃত। ওই নির্বাচনে মস্কোর এক দল হ্যাকারের ভূমিকা, সোশ্যাল মিডিয়ায় রুশ প্রচার, ই-মেল হ্যাকিং এবং ট্রাম্পের সহযোগীদের সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে তদন্ত করছেন মুলার।
ট্রাম্প বিচারব্যবস্থার কাজকর্মে বাধা দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ওই তদন্তে এফবিআইয়ের প্রাক্তন প্রধান জেমস কোমিকে সরানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ফ্লিনের কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত সম্পর্কে ট্রাম্প কী বলেছেন, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
বস্তুত মঙ্গলবারই এফবিআইকে মিথ্যে তথ্য দেওয়া ও তুরস্কের হয়ে গোপনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার জন্য মাইকের শাস্তি ঘোষণা করতে পারে ওয়াশিংটনের ফেডারেল আদালত। আবার জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের ‘উইকিলিকস’সংস্থা রুশ হ্যাকারদের কাছ থেকেই গোপন মার্কিন নথি পেয়েছিল কি না, তারও তদন্ত হচ্ছে।
ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের কথা গোপন রাখার জন্য পর্নস্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে অর্থ দিয়েছিলেন ট্রাম্পের প্রাক্তন কৌঁসুলি মাইকেল কোহেন। আইন মেনে প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী তহবিল থেকে ওই অর্থ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি কারাদণ্ড হয়েছে তার। ওই অর্থ দেয়ায় ট্রাম্পের নিয়ন্ত্রণাধীন বাণিজ্যিক সংস্থা ‘ট্রাম্প অর্গানাইজেশন’-ও জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। সেইসঙ্গে ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের তহবিলে কোনও বিদেশি শক্তি নিয়ম ভেঙে অর্থ জুগিয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখছেন নিউ ইয়র্কে ফেডারেল সরকারের আইনজীবীরা। সব মিলিয়ে প্রায় ১৭টি তদন্ত প্রক্রিয়ায় ট্রাম্প, তার সহযোগী বা সংস্থার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক মধ্যবর্তী নির্বাচনের পরে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। ফলে প্রেসিডেন্টের সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন রাজনীতিকেরা।
এরই মধ্যেই মঙ্গলবার মার্কিন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার অভিযোগ ফের উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো।
সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা একটি রিপোর্টে জানানো হয়, রাশিয়ার ‘ইন্টারনেট রিসার্চ এজেন্সি’ বেছে বেছে ডেমোক্র্যাট ভোটারদের নিশানা করে প্রচার চালিয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা হয়েছিল, ভোট দিয়ে লাভ নেই। রুশ সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই রিপোর্টে কী বলতে চাওয়া হয়েছে তা বোঝা দায়।