বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা জাতিসংঘে তুলে ধরলেন রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে বিদ্যমান আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির কথা জাতিসংঘে তুলে ধরেছেন সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
বুধবার জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘বৈষম্য, বৈরিতা ও সহিংসতা বন্ধে ঘৃণাত্মক বক্তব্য মোকাবেলা ও উসকানি প্রতিরোধ : জাতিসংঘ ব্যবস্থাপনার মধ্যে সমন্বয়’ শীর্ষক এক সাইড ইভেন্টে তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সপ্তাহ উপলক্ষে জাতিসংঘের জেনোসাইড প্রিভেনশন ও রেসপন্সিবিলিটি টু প্রটেক্ট কার্যালয় এই সাইড ইভেন্টের আয়োজন করে। এতে সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ, মরক্কো ও ইতালি।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয় উক্তি ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ উদ্বৃত করেন এবং কীভাবে বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃস্টান শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে মিলে-মিশে বসবাস করছে, তা তুলে ধরেন।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ধর্মীয় নেতা ও শিক্ষকদের আমাদের সমাজে সর্বোচ্চ সম্মানের চোখে দেখা হয় এবং এ কারণে আমরা তাদের সামনের সারিতে রেখে সমাজ থেকে ধর্মের অপব্যবহার, ঘৃণাত্মক বক্তব্য, অসিহষ্ণুতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
এ ক্ষেত্রে তিনি ধর্মীয় নেতা, মসজিদসহ ধর্মীয় উপসানলয় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণের বেশকিছু উদাহরণ তুলে ধরেন।
সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রবাদ ও মৌলবাদ নির্মূলে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি এবং এ ক্ষেত্রে সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ লক্ষ্যে ‘সমগ্র সমাজ’ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছি।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বহুপাক্ষিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের নানা দিক উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে গঠিত ‘গ্লোবাল কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ফান্ডের (জিসিআরইএফ) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং আন্তঃধর্মীয় প্রচারণা, আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপ ও সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধবিষয়ক গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস্’র সদস্য।
এ ছাড়া আমরা বাংলাদেশের ফ্লাগশিপ রেজুলেশন ‘শান্তির সংস্কৃতি’র মাধ্যমে আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপের প্রসারে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
ঘৃণাত্মক বক্তব্য রোধে কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়নসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জাতিসংঘের চলমান পদক্ষেপকে এগিয়ে নিতে বেশকিছু সুপারিশের কথা উল্লেখ করেন স্থায়ী প্রতিনিধি। এ ক্ষেত্রে তিনি রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি তুলে ধরেন।
গণহত্যা প্রতিরোধবিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অ্যাডামা ডিয়েং ইভেন্টটির সঞ্চালনা করেন। সম্প্রতি, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠান অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করে।