করোনা রোগিদের জীবন বাঁচাতে প্লাজমা ডোনারদের আর্থিক সহায়তা দেবে নিউ ইয়র্কের ডা. ফেরদৌস খন্দকার
বিশেষ প্রতিনিধি, নিউ ইয়র্ক:
প্লাজমা ডোনারদের আর্থিক সহযোগিতার ঘোষনা দিয়েছেন নিউ ইয়র্কের আলোচিত বাংলাদেশি চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস খন্দকার। করোনা আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে প্লাজমা দানকারীদের আগ্রহী করে তুলতে তিনি এই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন।
এব্যাপারে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সন্ধানী ব্লাড ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলে তার রক্তে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়৷ রক্তের হলুদাভ জলীয় অংশেই থাকে সেটা৷ এটাই প্লাজমা৷ সুস্থ হওয়া রোগীর রক্ত থেকে এই প্লাজমা নিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দিলে তার অ্যান্টিবডি বা করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে এবং রোগি সুস্থ হয়ে ওঠে৷ এটাই এখন প্লাজমা থেরাপী হিসেবে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এফডিএ এটাকে ইনভেস্টিগেশনাল নিউ ড্রাগস হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।
বাংলাদেশেও ইতিমধ্যে এই প্লাজমা থেরাপীর মাধ্যমে করোনা আক্রান্ত রোগিদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। তবে করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়া ব্যাক্তিরা প্লাজমা দেয়ার ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেনি।
নিউ ইয়র্কের ”মানবিক চিকিৎসক” হিসেবে ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পাওয়া ডা. ফেরদৌস খন্দকার করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে মানুষকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভন্নভাবে কাজ করে আসছেন। তার ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কোটি মানুষ সচেতন হয়েছে। করোনা ভাইরাস থেকে কিভাবে নিজেদেরকে রক্ষা করতে হবে বা কারোনা আক্রান্ত হলে পরিত্রাণের জন্য কি করতে হবে এমন বিষয় নিয়ে প্রতিদিন তিনি ফেসবুক লাইভে আসেন। তার ফেসবুক লাইভ শুরু হলে কয়েক মিনিটের মধ্যে তা ভাইরাল হয়ে যায়। করোনার এই দুর্দিনে নিউ ইয়র্কের অন্য চিকিৎসকরা চেম্বার বন্ধ করে বাড়িতে বসে থাকলেও একমাত্র ডা. ফেরদৌস খন্দকারই চেম্বার খোলা রেখে করোনা আক্রান্ত মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন গত তিনমাস ধরে। এছাড়া তিনি হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশীকে খাদ্য সহায়তা এবং নগদ অর্থও সাহায্য করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও তার এসব মানবিক ও কমিউনিটি সেবা প্রশংসিত হয়েছে।
শুধু নিউ ইয়র্কে নয় একইভাবে দেশেও তিনি অনেক ধরনের সহায়তা করছেন। বাংলাদেশের চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য ১৫হাজার কেএন-৯৫ মাস্ক ছাড়াও পুলিশ ও সেনাবহিনীর সদস্যদের জন্যে কয়েকহাজার মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাভস পাঠিয়েছেন।
এবার তিনি প্রাজমা ডোনারদের উৎসাহিত করতে নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছেন। টেলিফোনে ডা. ফেরদৌস খন্দকার নিউ ইয়র্ক মেইল কে জানান, প্লাজমা থেরাপী বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত রোগিদের জন্য একটি আশার আলো। ভ্যাকসিন আসার আগে এটাই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকরি চিকিৎসা। বাংলাদেশে ইতিমধ্যে এটার মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। সুস্থ হওয়া রোগীর রক্ত থেকে এই প্লাজমা নিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দিলে তার অ্যান্টিবডি বা করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। আক্রান্ত রোগীর শরীরে গিয়ে ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করে দেয় এবং রোগি সুস্থ হয়ে ওঠে দ্রুত।
করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়া ব্যক্তি রক্ত দিলে তার কোনো ক্ষতি হবে না কিন্তু তার দেয়া রক্তে আরেকজন করোনা আক্রান্ত রোগির জীবন বাঁচবে বলে জানান নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত মাউন সাইনাই হাসপাতালের এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ।
তিনি বলেন, করোনা রোগীকে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আমরা এই প্লাজমা থেরাপি দিতে পারি তাহলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এজন্য বাংলাদেশে প্লাজমা অনেক বেশি পরিমাণ জমা রাখতে হবে ভবিষ্যতের পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য। তাই প্লাজমা ডোনারদের এই কাজে উৎসাহিত করার জন্য তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতা করতে চান তিনি।
যারা প্লাজমা দিতে চান তাদেরকে-০১৫৩৩-৯৮৭৯১৫ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার।