‘‘মুখ বন্ধ রাখুন’’ ট্রাম্পকে হিউস্টন পুলিশ প্রধান: নিউ ইয়র্কে কারফিউ ভেঙ্গে নজিরবিহীন বিক্ষোভ, লুটপাট
মেইল ডেস্ক:
কৃষ্ণাঙ্গ যুবক হত্যার প্রতিবাদে চলমান নজিরবিহীন বিক্ষোভ নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মুখ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন টেক্সাসের হিউষ্টন শহরের পুলিশ প্রধান আর্ট আচেভেদো। সিএনএনের ক্রিষ্টিনা আমানপোরের কাছে এক সাক্ষাতকারে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন “ জনগণের জন্য গঠনমূলক কিছু করতেনা পাললে মুখ বন্ধ করে রাখুন ”প্লিজ কিপ ইউর মাউথ শাট”।
সোমবার এক ভিডিওতে যে করেই হোক বিক্ষোভ দমনের নির্দেশ দেন ট্রাম্প। এছাড়া তিনি নিজেও সেনা নামানোর হুমকি দেন। মঙ্গলবার তার প্রতিক্রিয়ায় পুলিশের এই কর্মকর্তা তাকে এই কথা বলেন। সিএনএনের এই সাক্ষাতকারের ভিডিও স্যোসাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে।
সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হিউস্টন পুলিশ প্রধান আচেভেদো ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, “এটা দমনপীড়নের ব্যাপার নয়, এটা জনগণের মনজয়ের ব্যাপার। ”নেতৃত্বের মৌলিক নীতিই এই। এই সময়েই আমাদের নেতৃত্বের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। দ্য অ্যাপ্রেন্টিসের (ট্রাম্প সঞ্চালিত ও প্রযোজিত টিভি অনুষ্ঠান) মঞ্চ ছেড়ে এখনই সময় প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠার। এটা হলিউড নয়। এটা বাস্তব জীবন। আর এখানে বাস্তবিকই জীবন ঝুঁকিতে আছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা রাজ্যে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসারের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছেই। বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে বিভিন্ন রাজ্য ও শহর। প্রতিবাদ কোথাও কোথাও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এদিকে নজিরবিহীন বিক্ষোভ আর লুটপাটের কারণে অন্যান্য রাজ্যের মতো নিউ ইয়র্কেও সোমবার রাত থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
দীর্ঘ ৭৭ বছর পর নিউ ইয়র্কে কারফিউ জারি করা হলো। ১৯৪৩ সালে এক আফ্রিকান আমেরিকান সৈন্যের ওপর পুলিশের গুলিকে কেন্দ্র করে হারলেমে প্রতিবাদ আন্দোলন হয়। বিক্ষোভ আর অতিমাত্রায় ভাংচুরের কারণে তৎকালীন মেয়র ফিওরিলো লার্গোডিয়া কারফিউ জারি করেন। বর্ণবাদ বৈষম্যের কারণে সেই আন্দোলন চলেছিল অনেকদিন।
এদিকে কারফিউ ভঙ্গ করে সোমবার রাতে ম্যানহাটনে অগ্নিসংযোগ ও ব্যপক লুটের ঘটনা ঘটেছে। হেরাল্ড স্কয়ারে মেসিস স্টোর ও আশপাশে কয়েকটি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ৬০ স্ট্রিট থেকে ডাউন টাউনের দিকে সোহোর শতাধিক দোকানে ভাঙচুর ও লুটতরাজ চলেছে। গত দুই দিনে ছয়শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ব্রুকলিন, কুইন্সের জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস ও স্টাটেন আইল্যান্ডে বিক্ষোভ ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়েছে ম্যানহাটনের ওয়াশিংটন স্কয়ার, ইউনিয়ন স্কয়ারসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে।