মিয়ানমারের সহায়তা সরিয়ে পুনর্বণ্টন করবে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক গ্লোরিয়া স্টিল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে ৪২ মিলিয়ন ডলার প্রত্যাহার করে পুনর্বণ্টনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই অর্থ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে সহায়তা হিসেবে দেওয়ার পরিবর্তে সে দেশের নাগরিক সমাজকে শক্তিশালী করার জন্য দেওয়া হবে বলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
গ্লোরিয়া স্টিল বিবৃতিতে বলেন, ইউএসএআইডি কয়েক দশক ধরে শান্তি, গণতন্ত্র ও মুক্তির সংগ্রামে মিয়ানমারের জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এর চেয়ে কম কিছু তাদের প্রাপ্য নয়। প্রেসিডেন্ট বাইডেন মিয়ানমারের গত ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানকে ‘দেশের গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে ফিরে যাওয়ার ওপর সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মিয়ানমারের জনগণ সামরিক বাহিনীর কারণে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই সংগ্রাম করে আসছে এবং অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে, তাদের সেই অগ্রগতি এভাবে অগণতান্ত্রিক উপায়ে মুছে ফেলার জন্য নয়।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে গত ২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দৃঢ় অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএসএআইডি মিয়ানমারে আমাদের সহায়তার একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করেছে। ফলশ্রুতিতে, ইউএসএআইডি মিয়ানমার সরকারের জন্য বরাদ্দকৃত ৪২.৪ মিলিয়ন ডলার সহায়তা সরকারের কাছ থেকে প্রত্যাহার করে পুনঃবণ্টনের নির্দেশ দিয়েছে। এই তহবিল সামরিক বাহিনীকে সহায়তা হিসেবে দেওয়ার পরিবর্তে আমরা সে দেশের নাগরিক সমাজকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের দেব।
গ্লোরিয়া স্টিল বলেন, ইউএসএআইডি দ্বিপাক্ষিক কর্মসূচির প্রায় ৬৯ মিলিয়ন ডলার দিয়ে মিয়ানমারের জনগণের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। বিশেষভাবে, আমরা কোভিড-১৯ মোকাবিলা করা সহ মিয়ানমারের জনগণের স্বাস্থ্যসেবা বজায় রাখতে ও উন্নত করতে কাজ চালিয়ে যাব এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করা, স্বাধীন গণমাধ্যমকে সমর্থন এবং সংঘাতময় অঞ্চলে শান্তি ও পুনর্মিলনের জন্য নাগরিক সমাজের দক্ষতা জোরদার করার জন্য কাজ করা অব্যাহত রাখব। এছাড়াও চীন, কাচিন, রাখাইন ও শান রাজ্য গুলোর পাশাপাশি এই অঞ্চলের রোহিঙ্গা ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্যও যুক্তরাষ্ট্র জীবন-রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
বিবৃতিতে ইউএসএআইডির ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক আরও বলেন, আমরা মিয়ানমার ও বাংলাদেশের আঞ্চলিক সঙ্কটে মানবিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বৃহত্তম দাতা সংস্থা। ২০২০ অর্থ বছরে যুক্তরাষ্ট্র ৪৬৯ মিলিয়নেরও বেশি মানবিক সহায়তা দিয়েছিল। এর ফলে সর্বশেষ ২০১৭ সালে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলের শরণার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মোট সহায়তার পরিমাণ প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের জনগণের জন্য ইউএসএআইডির সহায়তা এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা সম্মিলিতভাবে আরও বেশি গণতান্ত্রিক, দায়বদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে কাজ করতে পারব।