ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের লড়াই, ইতিহাস গড়তে মাঠে কমলা
আজ যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দেশের নাগরিকেরা পরবর্তী চার বছরের জন্য তাদের শীর্ষ নেতা নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। ফলাফল নির্ধারিত হবে জনতার ভোট এবং ইলেকটোরাল কলেজের সমন্বয়ে। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের প্রচার শেষ করেছেন।
শেষ মুহূর্তের প্রচারণাগুলোতেও ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচন নিয়ে তার স্বভাব সুলভ শঙ্কা প্রকাশ করেই চলেছেন। পক্ষান্তরে কমলা হ্যারিস বলছেন, সময় এসেছে আমেরিকার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়ার।
এবারের মার্কিন নির্বাচনের শেষ প্রচারণা সভায় অংশ নিয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ‘দুষ্ট যন্ত্র’ ও রাজ্যগুলোকে ‘ফেডারেল সরকারের এজেন্ট’ দাবি করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় ট্রাম্প বলেন, যদিও এটি সেই শক্তিশালী দুষ্টের দল— দুষ্ট যন্ত্র; তারা নির্বাচনে জিততে কূটকৌশল গ্রহণ করতে পারে এবং এটাই তাদের জন্য জেতার একমাত্র উপায়। আমরা এটা হতে দিতে পারি না। আমাদের আগের মতো করে জিততে হবে, তারপর সব ঠিক করতে হবে। রাজ্যগুলো ফেডারেল সরকারের আদেশ মতো কথা বলছে, তারা মূলত ফেডারেল সরকারের এজেন্ট।
এর আগে নর্থ ক্যারোলিনায় আরেক সমাবেশে ট্রাম্প তার সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ভোট দিতে বাইরে বেরিয়ে আসুন, যদি আমরা সবাই বের হয়ে আসি, ভোট দেই তবে তারা কিছুই করতে পারবে না।
নির্বাচনের আগের রাতে আরেক প্রার্থী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও পেনসিলভানিয়ার তার ভোটারদের নিয়ে সমাবেশ করেছেন। পিটসবার্গের একটি সমাবেশে তিনি বলেছেন, আমরা এই নির্বাচনে একটি ‘পার্থক্য তৈরি করব’।
সমাবেশে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘নতুন প্রজন্ম’ উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, হাওয়া আমাদের পক্ষে বইছে।
সমাবেশে তিনি বলেন, আগামীকাল নির্বাচন, হাওয়া আমাদের পক্ষে। পুরো প্রচারাভিযানে আমেরিকান জনগণের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং আমরা জানি আমেরিকাকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের সময় এসেছে।
ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বাদ দিয়ে দলের সমর্থন পেয়েছেন কমলা। তার রানিং মেট হিসেবে আছেন টিম ওয়ালজ, আর ট্রাম্পের সহ-প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জে ডি ভ্যান্স।
ট্রাম্পকে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও নির্বাচনে তার অংশগ্রহণে কোনো বাধা আসেনি। নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থনীতি, অভিবাসন, নারীর গর্ভপাতের অধিকার, এবং গাজা যুদ্ধ নিয়ে দুই প্রার্থী তুমুল বিতর্কে লিপ্ত। কমলা নারীর গর্ভপাতের অধিকারকে তার প্রচারের মূল এজেন্ডা বানিয়েছেন, আর ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অবৈধ অভিবাসন বন্ধ এবং আমদানি পণ্যে উচ্চ করারোপের।
জনগণের সরাসরি ভোটে নয়, ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। এতে সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান রাজ্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যার মধ্যে সাতটি রাজ্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এসব রাজ্যে সামান্য ব্যবধানে ট্রাম্প ও কমলা এগিয়ে আছেন।
নির্বাচনের আগে সহিংসতার আশঙ্কা থাকায় দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন। ট্রাম্প পরাজিত হলে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে সহিংসতা উসকে দিতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে।
এবারের নির্বাচনটি ঐতিহাসিক হতে চলেছে। কমলা জয়ী হলে তিনি হবেন প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট, আর ট্রাম্প জয়ী হলে তিনি প্রথম ফৌজদারি দোষী সাব্যস্ত প্রেসিডেন্ট হবেন।