প্রথম পাতার খবর মুছে অস্ট্রেলিয়ায় মিডিয়া প্রতিরোধের দৃষ্টান্ত প্রতিবাদ
অস্ট্রেলিয়ায় রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার অজুহাতে সংবাদপ্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সরকারের অভিযানে দেশটির প্রথম সারির দৈনিক পত্রিকাগুলো দৃষ্টান্ত প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) পত্রিকার প্রথম পাতার ‘প্রতিবেদন’ কালো কালিতে মুছে দিয়ে এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার বাকস্বাধীনতার কোনো সাংবিধানিক সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই, যদিও সরকার ২০১৮ সালে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইনকে আরো শক্তিশালী করার সময় শিসওয়ালা ব্লগারদের রক্ষার জন্য একটি বিধান যুক্ত করেছিল। তবে মিডিয়া গ্রুপগুলো বলছে- প্রেসের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ রয়েছে।
মিডিয়া, বিনোদন এবং কলা জোট (এমইএএ) জানিয়েছে, জাতীয় সুরক্ষার ছদ্মবেশে সংসদ দীর্ঘকাল আইন পাস করছে যা জনগণের জানার অধিকারকে বাধা দিয়েছে।
শিল্প ইউনিয়নের প্রধান নির্বাহী পল মারফি বলেছেন, সাংবাদিকতা আমাদের গণতন্ত্রের একটি মৌলিক স্তম্ভ। শক্তিশালীদের তদন্ত করা, অন্যায় কাজের বিষয়ে আলোকপাত করা এবং সরকারকে জবাবদিহি করার অধিকার আমাদের রয়েছে।
জানা যায়, সংবেদনশীল তথ্যে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ আইন থেকে সাংবাদিকদের অব্যাহতি দেয়া, তথ্য ব্যবস্থার যথাযথভাবে পরিচালিত স্বাধীনতা কার্যকর করা এবং মানহানি মামলা মোকদ্দমার মানদণ্ড বাড়াতে সরকারের উপর জনগণের চাপ দেয়ার লক্ষ্যে সোমবারে গণমাধ্যমে এ বিক্ষোভ হয়েছে।
বিক্ষোভে যোগাযোগমন্ত্রী পল ফ্লেচার তাৎক্ষণিক প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি।
সরকারের গণমাধ্যম দমনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদের পেছনে ‘রাইট টু নো’ সংগঠন সোচ্চার বলে মনে করা হচ্ছে। এ বছরের শুরুতে দু’টি প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে টেলিভিশন চ্যানেল এবিসি’র কার্যালয় ও নিউজ কর্প’র একজন সাংবাদিকের বাড়িতে কেন্দ্রীয় পুলিশের অভিযানের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছে তারা।
নিউজ কর্প’র সাংবাদিক অ্যানিকা স্মেথার্স্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার অস্ট্রেলিয়ানদের ওপর নজরদারির পরিকল্পনা করছে। আর এবিসি’র দুই প্রতিবেদক আফগানিস্তানে পশ্চিমা জোটের হয়ে অংশ নেয়া অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ বাহিনীর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের বিষয়াদি তুলে ধরেন। দু’টি প্রতিবেদনই সরকারকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলে দেয়।
ওই অভিযানের পর অ্যানিকা এবং এবিসি’র দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযাগ গঠন করতে চলেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
এ বিষয়ে মিডিয়া এন্টারটেইনমেন্ট অ্যান্ড আর্টস অ্যালায়েন্স ইউনিয়নের প্রধান পল মার্ফি বলেছিলেন, নিউজ কর্প’র সাংবাদিক অ্যানিকা স্মেথার্স্টের বাড়ি ও এবিসির সিডনি হেডকোয়ার্টারে অভিযান অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ।
বিশ্ব সংবাদমাধ্যম বলছে, অনেক উদার গণতন্ত্রের মতো অস্ট্রেলিয়ায় বাকস্বাধীনতা নিশ্চিতে সাংবিধানিক সুরক্ষা নেই। এ সংক্রান্ত কোনো বিশেষ আদেশও নেই। যেজন্য সেখানে বরাবরই দমন-পীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ করে আসছে সংবাদমাধ্যম।
যদিও এ অভিযোগের ব্যাপারে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বারবার বলে আসছেন, তার সরকার সবসময় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।