শিরোনাম
অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ রাষ্ট্র সংস্কার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপে তৎপর ভারতীয় আমেরিকানরা টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রে রাশিয়ায় হামলা করল ইউক্রেন কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর গাজায় ১০০ ট্রাক ত্রাণ লুট করে নিল মুখোশ পরিহিতরা নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 4 March, 2018 02:36

বাংলাদেশের ১৬% পোশাক কারখানায় উচ্চ পদে বিদেশিরা

বাংলাদেশের ১৬% পোশাক কারখানায় উচ্চ পদে বিদেশিরা
ঢাকা অফিস :

বাংলাদেশে দেশে তৈরি পোশাকশিল্পের ১৬ ভাগ কারখানায় বিদেশি শ্রমিকরা উচ্চ পদে-উচ্চ বেতনে কাজ করছেন। এদের মধ্যে প্রোডাকশন প্লানিংয়ে ৩৭ দশমিক ৩ শতাংশ, মার্চেন্টডাইজিংয়ে ২০ দশমিক ১ শতাংশ এবং কোয়ালিটি অ্যাসুয়ারেন্সে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ওয়াশিং সেক্টরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ বিদেশি শ্রমিক কাজ করছে।

শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এর তৈরি পোষাক শিল্প নিয়ে প্রকাশিত এক জরিপ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।

এ সময় সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান, সিপিডির রিসার্চ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সাবেক শ্রম সচিব মিকাইল শিপার, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি ফজলে শামীম, শ্রমিক নেতা বাবুল আকতার, সামসুন নাহার উপস্থিত ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ১৯৩ টি কারখানার ২ হাজার ২৭০ জন শ্রমিকের ওপর জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চার বছরে পোশাক খাতে কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। বিপরীতে ২০০৫ থেকে ২০১২ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। সে হিসেবে চার বছরে কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধির হার কমেছে দশমিক ৭১ শতাংশ। সার্বিকভাবে তৈরি পোশাক খাতে নারী শ্রমিকের সংখ্যাও কমেছে বলে উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়,পরিবারতন্ত্রে পরিচালিত বোর্ডের হার শতকরা ৮৯ শতাংশ।অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা বোর্ডের অধিকাংশই একই পরিবারের সদস্য। পোশাক খাতে পুরুষ ও নারীর মজুরির ক্ষেত্রে গড়ে তিন শতাংশ বেতন বৈষম্য রয়েছে। এখানে পরুষদের গড় বেতন ৭ হাজার ২৭০ টাকা, অপরদিকে নারীদের গড় বেতন ৭ হাজার ৫৮ টাকা। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর দেশে পোশাক খাতে সামাজিক অগ্রগতি হলেও অর্থনৈতিকভাবে অগ্রগতি পিছিয়েছে। এ সময় নারী-পুরুষের বেতন বৈষম্য কমলেও নারী কর্মসংস্থানের হার কমেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রযুক্তি ব্যবহারে বড় কারখানাগুলো এগিয়ে রয়েছে। আর ছোট কারখানাগুলো আরও পিছিয়েছে। এছাড়া প্রযুক্তি ব্যবহারে পুরুষের তুলনায় নারীরা পিছিয়ে আছে। তবে ট্রেড ইউনিয়নের অবস্থা দুর্বল হলেও শ্রমিক সংগঠনের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

রেহমান সোবহান বলেন, পোষাক শিল্পের এই সম্ভাবনাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। এ খাতে শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে ঐক্য না থাকায় তারা তাদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে জোরালোভাবে তুলে ধরতে পারছে না। পোষাক শিল্পে ৭০টির বেশি সংগঠন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিভক্তি থাকায় ন্যায্য দাবি আদায় হচ্ছে না।

পোষাক খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এ খাতের আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের ডেকে সম্মেলনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে রেহমান সোবহান আরও বলেন, এতে করে তারা বাংলাদেশের পোষাক খাতে আরো বেশি বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে।

দেবপ্রিয় ভট্রাচার্য্য বলেন, এই গবেষনার ভিতর দিয়ে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প যে একটি যুগান্তরকারী পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবং সেটি ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে এই মুর্হুতে দাড়িয়ে আছে এই চিত্রটি উঠে এসেছে গবেষণা প্রতিবেদনে।

তিনি বলেন, এই খাতে যে কাঠামোগত পরিবর্তন এসেছে, প্রযুক্তির নতুন যুগে প্রবেশ এবং আকারের যে পরিবর্তন হয়েছে এসব বিষয় স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। এতে করে পোশাক শিল্প নিয়ে নতুন ধারার সৃষ্টি হয়েছে। তবে একইসঙ্গে বলা যায় এই পরিবর্তনটা অশুভভাবে হয়েছে। সামাজিকভাবে এই পরিবর্তন যতটা হয়েছে অর্থনৈতিকভাবে ততটা হয়নি। কাঙ্খিত অর্থনৈতিক পরিবর্তন না আসলে সামাজিক পরিবর্তনটা ধরে রাখা যাবে না।

তিনি বলেন, ১২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এখনও পুরনো ভবনে অবস্থান করছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ১৬ শতাংশ বিদেশী কর্মকর্তা পোষাকশিল্পের মধ্যে কাজ করছে। তারা অত্যন্ত উচ্চ বেতনে কাজ করছে।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ৪ হাজার উচ্চ শিক্ষিত প্রশিক্ষিত লোক বের হচ্ছে। কিন্তু পোশাকখাতে চাহিদা অনেক বেশি হওয়ায় বিদেশি কর্মকর্তারা এখানে কাজ করছে।

সাবেক সচিব মিকাইল শিপার বলেন, বর্তমানে দেশে ছোট ছোট কারখানাগুলো নিজেরাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা ভাল দিক, কারণ এসব কারখানায় কমপ্লাইন্স মানা হত না।

শ্রমিক নেতা বাবুল আকতার বলেন, বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে ভারত ও শ্রীলঙ্কার অনেক শ্রমিক কাজ করছে। তারা অনেক টাকা এই দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। এটা কৌশলে বিদেশে টাকা পাচার করার শামিল।

 


নিউইয়র্ক মেইল/বাংলাদেশ/৪ মার্চ ২০১৮/এইচএম

উপরে