সরকারি চাকরিতে ‘কোটায় কেউ না এলে মেধাবীদের সুযোগ’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান জানিয়েছেন, এখন থেকে সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন কোটায় সংরক্ষিত পদে যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধা তালিকায় থাকা প্রার্থীদের মধ্য থেকে সেসব পদ পূরণ করা হবে।
এর বাইরে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের আপাতত কোনো সম্ভবনা নেই। আর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো চিন্তাভাবনা এখন করা হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে সিনিয়র সচিব এসব কথা বলেন।
মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘তাদের জন্যে পদ সংরক্ষিত আছে, থাকবে। কিন্তু যদি তাদের মধ্য থেকে উপযুক্ত প্রার্থী না পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে মেধা তালিকায় যারা ওপরের দিকে থাকবে তাদের দ্বারা এই পদ পূরণ করা যাবে। তাদের কোটাটাও বহাল আছে, আবার মেধাবিরাও যাতে সেখানে বঞ্চিত না হয়। এখন যেই ব্যবস্থাটা নেওয়া হয়েছে, এটা দুইটার একটা সহজ সমাধান, নিষ্পত্তি। অর্থাৎ কোনো পক্ষই এতে হার্ট (আঘাত) হওয়ার সুযোগ নাই। কোনো পক্ষ বঞ্চিত হচ্ছে না। মেধার মর্যাদাও পাচ্ছে। আবার কোটার প্রতি সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকছে। অর্থাৎ সেখান থেকেও সরকার সরে আসেনি। আমি মনে করি, এটা সবার জন্য গ্রহণযোগ্য একটি ব্যবস্থা।’
সচিব আরো জানান, সরকারি চাকরিতে বিশেষ করে কারিগরি শূন্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটায় সংরক্ষিত পদে সব সময় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায় না। এ কারণে সেই পদগুলো মেধা তালিকা থেকে পূরণের জন্য বার বার শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। এ ছাড়া কোটা পদ্ধতির পক্ষে-বিপক্ষে নানা মতামত আছে। তাই এর সহজ সমাধান হিসেবে শূন্য পদ মেধা তালিকা থেকে পূরণের সহজ সমাধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ১০০টি পদের ৫৫টি বিভিন্ন কোটায় সংরক্ষিত। এর মধ্যে ৩০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ ভাগ জেলা, ১০ ভাগ নারী এবং ৫ ভাগ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য। আর এসব পদে যোগ্য প্রার্থী না পেলে শতকরা এক ভাগ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। বাকি ৪৫ ভাগ মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানীর শাহবাগে কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ চাকরিপ্রার্থীরা। এ সময় তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে। যার মধ্যে রয়েছে, কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসা, যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদে মেধাবী নিয়োগ, কোটায় বিশেষ পরীক্ষা বন্ধ, চাকরিতে অভিন্ন বয়সসীমাসহ, কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও আন্দোলন গড়ে তোলে চাকরিপ্রার্থীরা।