জামিন হয়নি খালেদা জিয়ার
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশের দিন পিছিয়ে আগামীকাল ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানির শুরুতেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও খালেদার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, এখনো নিম্ন আদালতের নথি আসেনি। কিন্তু এ আদালতের প্রথা ও এখতিয়ার রয়েছে নথি ছাড়াই জামিন আদেশ দেওয়ার।
তখন আদালত বলেন, সেই এখতিয়ার প্রয়োগের সুযোগ আমাদের রয়েছে। যেহেতু আমরা নথি তলব করে আদেশ দিয়েছিলাম আজকে সেই আদেশ প্রতিপালনের দিন শেষ হচ্ছে। দেখি আদেশ প্রতিপালন হয় কি না। পরে আদালত আগামীকাল সোমবার বিকেলে আদেশের দিন নির্ধারণ করে দেন।
এদিকে ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বেঞ্চ সহকারী মোকাররম হোসেন জানিয়েছেন, রোববার দুপুরের মধ্যেই নথি উচ্চ আদালতে যাবে। এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি শেষ হয়। এই মামলাসংক্রান্ত নিম্ন আদালতের নথি আসার পর জামিন বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে আদালত বলেন।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি একই বেঞ্চ খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে তার জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। এ ছাড়া এই মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ড স্থগিত করা হয়। পাশাপশি নিম্ন আদালতের নথি ১৫ দিনের মধ্যে পাঠাতে ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে খালেদার ৮৮০ পৃষ্ঠার জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। বয়স, শারীরিক অবস্থা ও সামাজিক মর্যাদা বিবেচনাসহ ৩২টি যুক্তি দেখানো হয়।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ১ হাজার ২২৩ পৃষ্ঠার আপিল দায়ের করা হয়। আপিল আবেদনে নিম্ন আদালতের পাঁচ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে ৪৪টি যুক্তি দেখানো হয়। পাশাপাশি সম্পূরক হিসেবে জামিন চাওয়া হয়।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান এ আপিল দায়ের করেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রায় প্রদানকারী বিচারক ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামানের স্বাক্ষরের পর ১ হাজার ১৭৮ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন নিম্ন আদালত। এ মামলার অপর আসামি তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা জরিমানাও করা হয়।
নিউইয়র্ক মেইল/বাংলাদেশ/১১ মার্চ ২০১৮/এইচএম