রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৫ বছর
আজ ২৪ এপ্রিল। দেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। ২০১৩ সালের এই দিনে সাভারের রানা প্লাজা ধসে এক হাজার একশ’ ৩৬ জন শ্রমিকের করুণ মৃত্যু হয়। আহত হন কয়েক হাজার শ্রমিক। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে রানা প্লাজার সামনে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান।
এসময় নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরাও বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া নিহত শ্রমিকদের স্মরণে বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাভারের সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান। এসময় রানা প্লাজার সামনে নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন ও রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার ফাঁসির দাবি জানান।
এদিকে রানা প্লাজার পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে নিহত ও আহত শ্রমিকদের স্মরণে সাভারের অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় রানা প্লাজার সামনে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে অবস্থিত রানা প্লাজায় তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা প্রতিদিনের মতো সকাল আটটায় হাজির হন নিজ নিজ কর্মস্থলে। উৎপাদনও শুরু হয় নির্ধারিত সময়ে। হঠাৎ সাড়ে নয়টার দিকে বিকট শব্দ। আশপাশে উড়তে থাকে ধুলো-বালি। ধসে পড়ে রানা প্লাজা। শুরু হয় আহত শ্রমিকদের আহাজারি। উদ্ধারে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। পরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন সেনা ও নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। চলে বিরতিহীন উদ্ধার অভিযান।
শেষ পর্যন্ত ধসে যাওয়া প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে ১ হাজার একশ’ ৩৬ জন শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় দুই হাজার চারশ’ ৩৮ জনকে। আহতদের অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অনেকে আবার মানসিক রোগীতে পরিণত হয়েছেন।