মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী বিদেশ গেলে অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্মসচিবদের বিমানবন্দরে থাকতে হবে
মন্ত্রীরা রাষ্ট্রীয় কাজে বিদেশ যাওয়ার সময় এখন থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্মসচিবদের বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে সফরকালে মন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী তার ঢাকা ত্যাগ ও প্রত্যাবর্তনের সময়ও তারা উপস্থিত থাকবেন। যেসব প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রেও এ বিধান প্রযোজ্য হবে।
পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা বিদেশ গেলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের একজন যুগ্মসচিব বা উপসচিবকে বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকতে হবে। ১৮ এপ্রিল জারি করা হলেও সম্প্রতি এ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রকাশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়- ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর মন্ত্রী,প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রিগণের রাষ্ট্রীয় ও সরকারি কাজে বিদেশ গমন ও দেশে প্রত্যাবর্তনের সময় বিমানবন্দরে এবং দেশের অভ্যন্তরে সফরকালে অনুসরণীয় রাষ্ট্রাচার সংক্রান্ত নির্দেশাবলী সংশোধন করা হল।
দেশের অভ্যন্তরে মন্ত্রীদের সফরের বিষয়ে ৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়- দেশের অভ্যন্তরে সফরকালে মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী তার ঢাকা ত্যাগ ও প্রত্যাবর্তনস্থলে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্মসচিব) উপস্থিত থাকবেন। জেলা সদরে যথাসম্ভব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের স্থানীয় পর্যায়ের জ্যেষ্ঠতম কর্মকর্তা মন্ত্রীকে আগমন ও বিদায়ের স্থানে অভ্যর্থনা ও বিদায় সংবর্ধনা জানাবেন।
তবে সরকারি কাজে জেলা সদরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার না থাকলে সেক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ দায়িত্ব পালন করবেন। তবে মন্ত্রীর সফরের কথা জানার পর জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপার মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। মন্ত্রী চাইলে তারা সফর বাতিল করবেন। উপজেলা পর্যায়ে মন্ত্রীর সফরকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী পুলিশ সুপার এ দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের স্থানীয় পর্যায়ের জ্যেষ্ঠতম কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন। তবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ক্ষেত্রে মন্ত্রীর আগমন ও প্রস্থানের সময় বিমানবন্দর বা রেলস্টেশনে জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপার ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই বলেও নির্দেশনায় বলা হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মন্ত্রীগণের আগমন ও প্রস্থানের সময় বিভাগীয় কমিশনার বা সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টও জেনারেল অব পুলিশ (ডিআইজি) এর উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই। বিভাগীয় কমিশনার সদর দপ্তরে উপস্থিত থাকলে মন্ত্রীর আগমনের পর তার সঙ্গে সৌজন্যমুলক সাক্ষাৎ করতে পারেন। মন্ত্রিগণের সফরসূচি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীর বিদেশ সফরকালে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ বিভাগের একজন যুগ্মসচিব্/উপ-সচিব বিমান বন্দরে উপস্থিত থাকবেন। দেশের অভ্যন্তরে প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী তার ঢাকা ত্যাগ ও প্রত্যাবর্তনকালে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রিগণের সফরসূচি সরকারি না ব্যক্তিগত তা তাদের দপ্তর হতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণকে অবহিত করতে হবে। সরকারি সফরের সময় মন্ত্রী. প্রতিমন্ত্রী. উপ-মন্ত্রিগণের জন্য যানবাহন ও আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যক্তিগত সফরের জন্য যানবাহন ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হলে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীগণকে প্রচলিত নিয়মে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।
নির্দেশনা আরো বলা হয়েছে, একান্ত ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক সফরের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। স্বাভাবিক সরকারি কাজকর্মের পাশাপাশি একজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, জনসভা ইত্যাদিতে যোগদান করতে পারেন। তবে, প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনি প্রচার অভিযানের অংশ হিসাবে জনসভায় ভাষণ দান ও রাজনৈতিক কর্মীদের সভায় যোগদান ব্যক্তিগত ভ্রমণ হিসাবে গণ্য হবে।