খালেদা জিয়ার আত্মজীবনী লেখা হচ্ছে
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আত্মজীবনী প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে তার দল।
শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ওপরে বই লেখা হচ্ছে। তার আত্মজীবনী লেখা হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, সেই আত্মজীবনীতে আমরা এমন কিছু কিছু জিনিস পাব, যা অনেকেই জানি না।
খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণের ৩৪ বছরপূর্তির পরদিন এ খবর দিলেন মহাসচিব।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতার পালাবদলের একপর্যায়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান। ১৯৭৮ সালে তার তত্ত্বাবধানেই বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়।
রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে একদল সেনা কর্মকর্তার হাতে নিহত হন জিয়াউর রহমান। এরপর দলের নেতাকর্মীদের অনুরোধে রাজনীতিতে আসেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া।
১৯৮৩ সালে খালেদা জিয়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিচারপতি আবদুস সাত্তার দায়িত্ব থেকে অবসর নিলে ১৯৮৪ সালে ১০ মে দলের চেয়ারপারসন হন তিনি।
খালেদার নেতৃত্বে বিএনপি ১৯৯১ সাল ও ২০০১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। দুই দফায় বিরোধী দলের নেতা ছিলেন তিনি।
দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে তিন মাসের বেশি কারাবন্দি বিএনপি নেত্রীকে নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সমালোচনামূলক বক্তব্যের নিন্দা জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, “আজকে কী নির্মমভাবে, নিষ্ঠুরভাবে আমাদের তথাকথিত সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বারবার আমাদের নেত্রীকে ছোট করার চেষ্টা করেন। তিনি চেষ্টা করেন দেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ছোট করার, তিনি চেষ্টা করেন তরুণদের যে নেতা জনাব তারেক রহমানকে ছোট করার।
“ইতিহাস বহু তো প্রমাণ করেছে। আমি বলতে চাই, আবারও প্রমাণ করবে তাদের এই যে ছোট করার প্রবণতা এটা কখনোই জনগণ মেনে নেবে না। তারা তাদের নিজস্ব মহিমায় একদিন উজ্জ্বল হয়ে বেরিয়ে আসবেন।”
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তার ভূমিকা এবং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে, বিশেষ করে নারী শিক্ষাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে তার অবদানের কথা তুলে ধরেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল।
অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিও জানান তিনি।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের ৩৪ বছরপূর্তি উপলক্ষে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘দেশনেত্রীর রাজনীতি: সংগ্রাম ও সফলতা’ শিরোনামে এই আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী হয়। ১৯৮২ সাল থেকে এই পর্যন্ত খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের নানা সময়ের আলোকচিত্র এতে স্থান পায়।
এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার নামে একটি গবেষণা সংস্থা।
দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টারের সদস্য আলোকচিত্রী বাবুল তালুকদার বক্তব্য রাখেন।