ছাত্র আন্দোলন : সংঘর্ষ ছড়াচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে
নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ এবং নিহত দুই শিক্ষার্থীর ঘাতক বাসচালকের ফাঁসিসহ ৯ দফা দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনে নতুন মোড় নিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন এবং সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে।
শনি এবং রোববার ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় সহিংসতা এবং পুলিশের মারমুখী আচরণের পর সোমবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কাছে এবং রাজধানীর আরো দুটো বড় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ হয়েছে।
দুপুরের পর বসুন্ধরা এলাকায় নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র রাস্তা অবরোধ করতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ছাত্ররা তা অমান্য করতে গেলে, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বেধে যায়। ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। অনেক ছাত্র সেসময় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভেতরে ঢুকে পড়ে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। একজন ছাত্র অভিযোগ করেন, পুলিশ এ সময় রাবার বুলেট ছুঁড়েছে।
এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের একটি মিছিল শাহবাগ চত্বরের দিকে আসার চেষ্টা করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বাড্ডা এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও আজ হাঙ্গামা হয়েছে।
জানা গেছে, সেখানে সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের বেশ কিছু সদস্য সকাল ১০টার দিকে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্যাম্পাস ঢুকতে বাঁধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র হৃদয় ইসলাম বলেছেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে। ভাঙচুর করেছে। পরে পুলিশ বেশ কয়েক দফা কাঁদাসে গ্যাস ছুঁড়েছে।
তিনি আরো বলেন, সকাল সাড়ে দশটার দিকে হাঙ্গামা শুরু হয়। মনে হয়, গতকাল ছাত্রলীগের একটি মিছিলকে ধাওয়া করার ঘটনার বদলা নিতে এই হামলা করা হয়েছে।
বেলা তিনটার দিকে তিনি জানান, হাজার খানেক ছাত্র-ছাত্রী ক্যাম্পাসে আটকা পড়ে আছেন, ভয়ে বেরুতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই কুর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ছাড়া আহত হন বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হল শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞানবিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মীম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব।
এ ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তারা নৌপরিবহনমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খানের পদত্যাগ এবং ৯ দফা দাবিতে টানা আন্দোলন করেন।