ত্যাগের মহিমায় দেশজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা।
দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মুসলমানদের ঈদের আনুষ্ঠানিকতা। শিশু, কিশোর, প্রাপ্তবয়স্ক বৃদ্ধ সকলেই বিভিন্ন ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করেন। সেখানে সাম্য ও সম্প্রীতির বার্তা দেয়া হয়েছে। নামাজ শেষে কোলাকুলি আর একে অপরের কুশলবিনিময় করেন মুসল্লিরা।
বুধবার সকাল আটটায় জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাত হয়। জামাতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদসহ বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন। বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি জামাতসহ রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৪০৯টি ঈদ জামাত। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় এবারো অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের বৃহত্তম জামাত।
নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও উম্মাহর মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে। পরে পশু কোরবানি দেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। অনেকে গরিব, দুঃখী মানুষের প্রতি বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত। কেউবা টাকা পয়সা বিলিয়েছেন আবার কেউ বা খাবার তুলে দিয়েছেন গরিব দুঃখীদের মুখে।
ঈদুল আযহা উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের সব কারাগার, সরকারি হাসপাতাল, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম, শিশুসদন, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, সেফ হোমস, দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্র এবং শিশু ও মাতৃসদনে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
বুধবার সকাল আটটায় সুপ্রিম কোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সকাল সাতটায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানে আরও চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
মুসলমানদের অন্যতম প্রধান এ ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন। ঈদের দিন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠান জাঁকজমকের সাথে পালন করে আসছে। এটা আমাদের সম্প্রীতির এক অনুপম ঐতিহ্য।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, প্রতিবছর এ উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে স্বচ্ছল মুসলমানরা কোরবানিকৃত পশুর মাংস আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুঃখীর মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে মানুষে-মানুষে সহমর্মিতা ও সাম্যের বন্ধন প্রতিষ্ঠা করে।
‘ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দেয়। পবিত্র ঈদুল-আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদও ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশবাসীকে। কারাগার থেকে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও।
মুসলিমদের ধর্মীয় এ উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও দেশবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।