জাপার প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করবেন এরশাদ
আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করবেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দলের প্রার্থী বাছাই করাসহ নির্বাচনী সব সিদ্ধান্তই এককভাবে নেবেন তিনি।
শুধু তাই নয়, জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে এককভাবে নাকি জোটগতভাবে অংশ নেবে, সে সিদ্ধান্তও নেবেন দলটির চেয়ারম্যান।
রোববার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপিদের এক যৌথসভায় নেতারা দলের চেয়ারম্যানকে সর্বসম্মতভাবে এসব ক্ষমতা অর্পণ করেন।
এ সময় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারণী সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
সুত্র আরো জানায়, বিএনপি নির্বাচনে না এলে ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে জাপা। বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে তাহলে ফের মহাজোট থেকে নির্বাচন করবে দলটি। প্রেসিডিয়াম ও দলীয় এমপিদের এই যৌথসভায় ৩০০ আসনে একক নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে একক নাকি জোটগতভাবে নির্বাচনে যাবে দল, পরিস্থিতি দেখে-বুঝে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
বৈঠকে আগামী ২০ অক্টোবর রাজধানীর সোহওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নির্বাচনের আগে এই সমাবেশ হবে এরশাদের শেষ শোডাউন। ২০ তারিখের মহাসমাবেশ সফল করতে লোকসমাগমসহ পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের ১ লাখ টাকা এবং দলীয় সংসদ সদস্যদের ৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন এরশাদ।
নেতাদের উদ্দেশ্যে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রাখতে হবে- একক অথবা জোটগত নির্বাচন। বিএনপি নির্বাচনে আসুক, না আসুক আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আমরা ৩০০ আসনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। বিএনপি কী করছে, কী কর্মসূচি দিচ্ছে তার দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। আগামী নির্বাচনে যেভাবেই হোক আমাদের ভালো ফল আনতে হবে।
বৈঠকে পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলের নেতা রওশন এরশাদ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল মাহমুদ অভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগত নির্বাচনে জাপার ছাড় দেওয়া আসনে যেন নৌকার কোনো ডামি বা বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার কথা বলেন।
দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুল হক চুন্নু সম্প্রতি মিডিয়ায় রওশন ও এরশাদের দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রকাশিত নিউজ প্রসঙ্গে বলেন, এ দ্বন্দ্ব থাকলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জবাবে রওশন এরশাদ বলেন, আমাদের মাঝে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তাছাড়া আমি নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আলাদা কোনো তালিকাও দেইনি।
বৈঠক শেষে পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি আগামী জাতীয় নির্বাচন মহাজোটে না এককভাবে করবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বিএনপির গতি-প্রকৃতি দেখে। আমরাও চাই নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ। একক নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
২০ অক্টোবর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন রুহুল আমিন হাওলাদার।
মহাজোটের সঙ্গে থাকা না থাকা প্রসঙ্গে জাপা মহাসচিব বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে ড. কামাল হোসেনের বৈঠক হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, কামাল হোসন সিঙ্গাপুর যাননি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন- জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, ফখরুল ইমাম এমপি, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, শেখ সিরাজুল ইসলাম, এস এম ফয়সল চিশতী, সালমা ইসলাম এমপি, সুনীল শুভ রায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, মো. আজম খান, এ টি ইউ তাজ রহমান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. খালেদ আখতার, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, নুরুল ইসলাম ওমর এমপি, মাহজাবিন মোরশেদ এমপি, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, গোলাম কিবরিয়া টিপু, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী এমপি, সৈয়দ আব্দুল মান্নান, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, মহসিন রশীদ, মশিউর রহমান রাঙা এমপি, সোলায়মান আলম শেঠ, আলহাজ আতিকুর রহমান খান, আব্দুর রশিদ সরকার, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মুজিবুর রহমান সেন্টু, ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, নোমান এমপি, সেলিম উদ্দিন এমপি, এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান এমপি, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন এমপি, শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি, জিয়াউল হক মৃধা এমপি, শওকত চৌধুরী এমপি, সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি এমপি, ইয়াহইয়া চৌধুরী এমপি, আমির হোসেন ভূঁইয়া এমপি, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, হাজী মো. ইলিয়াস এমপি, ইঞ্জিনিয়ার মামুনুর রশীদ এমপি, খোরশেদ আরা হক এমপি, মো. আলতাফ হোসেন এমপি, শাহানারা বেগম এমপি, অধ্যাপক ডা. মো. আক্কাস আলী এমপি।