‘এফবিআই-ইন্টারপোলের তদন্তে তারেকের নাম ছিল না’
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলেটির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেয়া হয়েছে।
কিন্তু এই হামলার দায় নিতে রাজি নয় বিএনপি। বুধবারই এক সংবাদ সম্মেলনে এই মামলার রায়কে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে এ রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২১ আগস্ট সেই নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তৎকালীন বিএনপি সরকারই সেই সময় প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার জন্য মামলা দায়ের করেছে। স্থানীয় তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি এফবিআই এবং ইন্টারপোলকে সম্পৃক্ত করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছেন, মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানোর কারণে মামলায় রায়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, কারণ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই, কিন্তু তারপরেও তাকে সাজা দেয়া হয়েছে। আর ২০০৯ সালের পরে কী হয়েছে সেটা দেখতে হবে। তার আগে এফবিআই এবং ইন্টারপোল তদন্ত করেছে, তাদের কোনো প্রতিবেদনে তো তারেক রহমানের নাম আসেনি।
উল্লেখ্য, ১৪ বছরের বেশি সময় পরে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হয়েছে বুধবার। রায়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
৬০ দিন সময় পাবেন তারেক রহমান:
২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আপিল করতে চাইলে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেছেন।
এছাড়া তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই বলে মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের মধ্যে বন্দিসমর্পণ চুক্তি না থাকলেও জাতিসংঘের মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যসিসট্যান্স (এমল্যাট) সনদের আওতায় তারেক রহমানকে বিচারের জন্য হস্তান্তর করা যেতে পারে। দুটি দেশের মধ্যে আইনগত এবং বিচারিক সহযোগিতার ভিত্তি এই সনদ।
তবে তারেক রহমান আপিল করতে চাইলে ৬০ দিন সময়ের যে বক্তব্য আইনমন্ত্রী দিয়েছেন, সে বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, তারেক রহমানকে দু'মাসের সময়সীমার মধ্যেই আপিল করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
তিনি বলেন, তারেক রহমান যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেন, তাহলে 'কন্ডোনেশন অব ডিলে'র আওতায় আদালত বিলম্ব মার্জনা করে দু'মাস পরও তাকে আপিল করার অনুমতি দিতে পারেন বলে মওদুদ আহমদ বলেন। এক্ষেত্রে সময়সীমার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকে না।
আর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মওদুদ আহমদ বলেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বক্তব্য রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর। তারা (আওয়ামী লীগ) গত ১০ বছর ধরেই তো বলছে তাকে ফেরত আনবে। কিন্তু পেরেছে কি? আর না পারলে, তারা কি বলতে পারছে কেন তারা পারছে না?