শেষবারের মতো প্রিয় শিল্পীকে দেখতে হাজারো ভক্তের ঢল
কিংবদন্তী আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ শনিবার সকালে আকাশপথে ঢাকা থেকে তার জন্মস্থান চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। সেখান থেকে মরদেহ নেয়া হয় তার নানার বাড়ি মাদারবাড়িতে।
মাদারবাড়িতে নেয়ার পর থেকে প্রিয় শিল্পীকে শেষবারের মতো এক নজর দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজির হচ্ছে হাজারো ভক্ত।
শনিবার সকালে সাড়ে ১১টায় ‘কিংবদন্তীর মৃত্যু নেই-বাংলাদেশ’ লেখা গাড়িটি প্রবেশ করে মাদারবাড়িতে। পূর্ব মাদারবাড়ির বালুর মাঠে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও ভক্তকুলকে তাকে এক নজর দেখানোর জন্য করা হয়েছে প্যান্ডেল।
গাড়ির পাশেই দাঁড়িয়ে বাবার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে আহনাফ তাজওয়ার।
তাজওয়ার বললেন, জীবদ্দশায় কোনও ভুল করে থাকলে বাবাকে ক্ষমা করে দেবেন।
এদিকে বিশৃঙ্খলা এড়াতে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন শিল্পীর নানার বাড়িতে ভিড় না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন এবং তিনি সবকিছু তদারকি করছেন।
তিনি বলেন, আইয়ুব বাচ্চু চট্টগ্রাম তথা দেশের সম্পদ ছিল। তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তাকে স্মরণ করে আমরা তার স্মৃতি রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছি এবং করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়নে দাফনের ব্যবস্থা নিয়েছি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আইয়ুব বাচ্চুর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার খরণা ইউনিয়নের হলেও তিনি ছোটকাল থেকে বড় হয়েছেন চট্টগ্রাম শহরে। নগরীর ফিরিঙ্গী বাজার ও এনায়েত বাজারে তাদের বাড়ি থাকলেও তিনি থাকতেন নগরীর মাদারবাড়ির নানার বাড়িতে।
জানা যায়, বাদ আসর চট্টগ্রামের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে তার জানাজা হবে। তারপর মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে। বাচ্চুর শেষ ইচ্ছা ছিল তার মায়ের পাশে যেন তাকে কবর দেয়া হয় বলে জানান তার মামা আবদুল আলীম লোহানী।
এর আগে শনিবার সকাল ১১টার দিকে ইউ এস বাংলার ফ্লাইটে তার মরদেহটি চট্টগ্রামে নেয়া হয়। মরদেহের সঙ্গে তার প্রবাসী স্ত্রী, দুই সন্তান আহনাফ তাজওয়ার ও মেয়ে ফাইরুজ সাফরাসহ ২১ জন ছিলেন। আইয়ুব বাচ্চুর দুই প্রবাসী সন্তান গতকাল রাতেই বিদেশ থেকে আসছেন। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে তার মরদেহ ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালের হিমাগার থেকে বিমানবন্দরে নেয়া হয়।
এর আগে গতকাল শুক্রবার সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে নেয়া হয় কিংবদন্তি ব্যান্ড শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ। জাতীয় ঈদগাহে জানাজা ছাড়াও আরও দুটি জানাজা হয় ঢাকায়।
বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৮টায় হৃদরোগের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। সকাল সোয়া ৯টায় তাকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ৯টা ৫৫ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।