নির্বাচন আর না পেছাতে ইসির যত যুক্তি
২৩ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন রেখে গত ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর বি চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টের দাবির প্রেক্ষিতে এক সপ্তাহ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের দিন ঘোষণা করে পুনঃতফসিল দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
কিন্তু বুধবার বিকালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নির্বাচন আরও পেছানোর দাবি জানিয়েছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে জানান, তারা নির্বাচন তিন সপ্তাহ পেছানোর দাবি জানিয়েছেন।
ঐক্যফ্রন্টের এ দাবির প্রেক্ষিতে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যুক্তি দিচ্ছে, সংবিধান মেনেই ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচন করা যাবে।
কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলছে, ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে না পারলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে।
কেন নির্বাচন কমিশন এই যুক্তি মানছে না? কেন তারা মনে করছেন ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যেই তাদের নির্বাচন করতে হবে?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নির্বাচন কমিশনের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি করে বিবিসি বাংলা ইসির যুক্তি তুলে ধরে বলেছে, নির্বাচন কমিশন মনে করছে- কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন কারণে ৩১ ডিসেম্বর থেকে পরের তিন সপ্তাহ পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে নির্বাচন নিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা পাওয়া সম্ভব হবে না।
নির্বাচন কমিশন মনে করছে, যেহেতু ঘটা করে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন এখন ঢাকার বাইরে অন্যান্য বড় শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে, সে কারণে ৩১ তারিখ রাতে নিরাপত্তা বাহিনীকে সেটি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়।পহেলা জানুয়ারিতেও তার রেশ গিয়ে পড়ে।
১১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই দফায় বিশ্ব ইজতেমা হবে। ইজতেমার সময় নিরাপত্তা ব্যাপারে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য সবসময়ই একটি বড় দায়িত্ব।
নির্বাচন কমিশন সে কারণে মনে করে, জানুয়ারির মাঝামাঝি নির্বাচন করা অসম্ভব। কারণ ইজতেমা নিয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে জানুয়ারির ২০ তারিখ পর্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হবে।
ইজতেমা এ বছর পিছিয়ে দেয়া যায় কিনা? এই প্রশ্নে ওই কর্মকর্তা বলেন, ইজতেমায় বহু দেশ থেকে বহু মানুষ আসেন। অনেক কর্মসূচি অনেক আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে। ফলে ইজতেমা পেছানো প্রায় অসম্ভব।
ইজতেমার পর অর্থাৎ ২০ তারিখের পর নির্বাচন কেন করা যাবে না? এ প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনের ওই কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে নিয়ে গেলে সংবিধান সংকট তৈরির ঝুঁকি থাকবে।
তার ভাষ্য, 'জানুয়ারির ২৮ তারিখের মধ্যে নতুন সংসদ হতে হবে। যদি কোনো কারণে কোনো আসনে বা কোনো সেন্টারে নতুন ভোট করতে হয়, তাহলে তার জন্য সময় প্রয়োজন। কতগুলো আসন বা সেন্টারে নতুন করে ভোট নিতে হতে পারে এবং তার জন্য কতটা সময় প্রয়োজন তা আগে থেকে অনুমান করা সম্ভব নয়।ফলে নির্বাচন কমিশন হাতে কিছু সময় রাখতে চায়।'