শিরোনাম
৮ নভেম্বর লন্ডনে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া! যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের জার্মানিতে ইরানের সব কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণা কড়া নিরাপত্তায় নয়াদিল্লির বাংলোয় আছেন শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে দাঁতভাঙা জবাব পাবে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র: খামেনি নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 16 November, 2018 03:01
ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন : প্রধান ড. কামাল, সদস্য সচিব ফখরুল

ড. কামালের নেতৃত্বে ধানের শীষে নির্বাচন

ড. কামালের নেতৃত্বে ধানের শীষে নির্বাচন
ঢাকা অফিস :

ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ নির্বাচন করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ভোটের লড়াইয়ে মহাজোট প্রার্থীদের মোকাবেলায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর আগে দ্রুত আসন ভাগাভাগি এবং সে অনুযায়ী প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবে নতুন এ জোট। দল ও জোটের মত উপেক্ষা করে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে বহিষ্কার করা হবে। বৃহস্পতিবার ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে অনুষ্ঠিত স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।

এতে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে প্রধান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি দল ও জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত করবে। প্রার্থীদের অনুকূলে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেবেন এর সদস্যরা। এ চিঠিতে স্ব স্ব দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারও স্বাক্ষর থাকবে। বিএনপিসহ জোটের শরিক দলগুলোর সাত শীর্ষ নেতা এ কমিটির সদস্য থাকবেন। জোটের শীর্ষ নেতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং কে কোন আসন থেকে ভোট করবেন, তাও ঠিক করা হয়েছে এদিনের বৈঠকে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপিসহ নিবন্ধিত দল রয়েছে চারটি। এর মধ্যে আ স ম আবদুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে আগেই অবহিত করেছে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম এর আগে দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে নির্বাচন করার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিল। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে তারাও ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করার বিষয়টি কমিশনকে বৃহস্পতিবার অবহিত করেছে। জোটের আরেক শরিক দল বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতীক গামছা ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতীকে অংশ নেবে বলে জানিয়েছিল। এখন তারাও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মুহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোকাব্বির খান, আ ও ম শফিকউল্লাহ প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রার্থী তালিকা দ্রুত চূড়ান্তের সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমে দলগুলো তাদের প্রার্থী তালিকা করবে। এরপর আসন ভাগাভাগির ফয়সালা হবে। এ সময় শরিক দলগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয় তারা তাদের প্রার্থী তালিকা প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে। প্রার্থী তালিকা-পরবর্তী কাজ জোটের স্টিয়ারিং কমিটির ওপর ছেড়ে দেন তারা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে পারবেন এমন প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দেয়া হবে। এ ছাড়া বৈঠকে যে কেনো পরিস্থিতিতে বিএনপিসহ জোটের শরিক দলের নেতাকর্মীদের শান্ত থাকতে, কোনো ফাঁদে পা না দিতে এবং শেষমুহূর্ত পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত হয়।

সভা শেষে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অভিন্ন প্রতীক হবে ‘ধানের শীষ’। তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সবাই একটি অভিন্ন প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করব। সেই প্রতীক হবে ধানের শীষ। আসন বণ্টন নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মান্না বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনার যাত্রা শুরু করেছি। দ্রুত বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।’

নির্বাচন এক ঘণ্টাও পেছানোর সুযোগ নেই- আওয়ামী লীগের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন সরকারের সঙ্গে দেখা করি প্রধানমন্ত্রীসহ সবাই বলেন, নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা নির্বাচন কমিশনারের কাছে গিয়ে যা বলেছি নির্বাচন পেছানোর জন্য তাতে অসংখ্য যুক্তি আছে। বিশেষ করে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে উৎসব হয়। ফলে পর্যবেক্ষকদের আসার কথা থাকলেও তারা আসতে পারবেন না। এতে সারা বিশ্ব থেকে এক ধরনের বিচ্ছিন্ন করে ভোট করার এ প্রচেষ্টা ঠিক নয়।’ তিনি বলেন, ‘সরকারি দল বলেছে নির্বাচন এক ঘণ্টাও পেছানো যাবে না, যা এক ধরনের হুমকি। আমি এর নিন্দা জানাচ্ছি।’

মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, ‘বুধবার বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের নির্মম হামলার তীব্র প্রতিবাদ করছি। একদিকে সরকারপক্ষ চারদিন ধরে সমস্ত রাস্তাঘাট বন্ধ করে উৎসব করল। সেই উৎসবের ফলে দু’জন মারা পর্যন্ত গেল। তখন পুলিশ কিছুই করেনি। অথচ বিরোধী দল বিএনপির মনোনয়নপত্র বিতরণ উপলক্ষে যখন নেতাকর্মীরা জমা হয়েছে তার একদিন আগে নির্বাচন কমিশন সড়ক পরিষ্কার রাখতে বিবৃতি দিল এবং তার পরদিনই এ হামলা হল। আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশনের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত ছিল।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, এ হামলার পর পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য সরকারি দলের হাত আছে। অসমর্থিত কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য খবরে জানা গেছে যে, যুবলীগ-ছাত্রলীগের কর্মীরা হেলমেট পরে, সেই যে হেলমেট বাহিনী আমরা কোটা আন্দোলনের সময় দেখেছিলাম, সেই বাহিনী নয়াপল্টনে তৎপর ছিল। আমরা এ ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানাই।’ মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি সরকার চেষ্টা করছে, বিরোধী দল যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেই উসকানি দিচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করব। আমাদের সিদ্ধান্ত সব রকমের বাধা উপেক্ষা করে নির্বাচন করব। সেই নির্বাচনে স্বৈরাচারী এ সরকারের বিরুদ্ধে একটা ভোট বিপ্লব হবে।’

উপরে