শিরোনাম
আগে চারজন দাঁড়াত, এখন একটা মারলে ৪০ জন দাঁড়াবে: ড. ইউনূস প্রযুক্তিগত ত্রুটি, যুক্তরাষ্ট্রে বিমান চলাচল বন্ধ গিনিতে ফুটবল ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১০০ নিহত রাশিয়ার ‘হাইব্রিড আক্রমণ’ নিয়ে সতর্কতা জার্মানির ভারতে মসজিদে ‘সমীক্ষা’ চালানো ঘিরে সংঘর্ষ, নিহত ৩ সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর সাগরে ডুবে গেল বাংলাদেশ থেকে ফেরা সেই রুশ জাহাজ নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 9 January, 2019 01:56

শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের সরাতে মিয়ানমারের নতুন পাঁয়তারা

শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের সরাতে মিয়ানমারের নতুন পাঁয়তারা
সুজাউদ্দিন রুবেল, তুমব্রু থেকে :

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের তমব্রু শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সরাতে নতুন পাঁয়তারা শুরু করেছে মিয়ানমার। সীমান্তে দেশটির অভ্যন্তরে ঘন ঘন গুলিবর্ষণ, অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি, রাতে কাঁটাতার ঘেঁষে অতিরিক্ত সৈন্য সমাবেশসহ এখন নতুন করে খালে ব্রিজ তৈরি করছে। 

এতে বর্ষা মৌসুমে শূন্যরেখা ও স্থানীয় কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে যাবে বলে দাবি রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের। তবে বিষয়টি নজরে এসেছে এবং এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক।

মিয়ানমারের সব দৃষ্টি যেন বান্দরবানের তমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায়। যেখানে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট নির্যাতনে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার রোহিঙ্গা। আর এসব রোহিঙ্গাদের সরাতে বারবার নানা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। এর জন্য সীমান্তে দেশটির অভ্যন্তরে ঘন ঘন গুলিবর্ষণ, অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি, রাতে কাঁটাতার ঘেঁষে অতিরিক্ত সৈন্য সমাবেশ ঘটানো হচ্ছে। তারপরও নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া ছাড়া শূন্যরেখা ছাড়তে রাজি নয় রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বৌদ্ধ, আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনী যুদ্ধ চলছে। মিয়ানমার বলছে, এর জন্য নাকি আমরা রোহিঙ্গারা দায়ী। এই জন্য আমরা জিরো পয়েন্টে যে রোহিঙ্গারা রয়েছি, তারা খুবই আতঙ্কিত। সোমবার সকালে মংডুর টাউনশিপের প্রশাসক আমাদেরকে বলেন, এখান থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়েছি। এখন আরো যেসব রোহিঙ্গা মংডুর টাউনশিপে রয়েছে তাদের হত্যা কিংবা নির্যাতন করে তাড়ানোর জন্য পুনরায় সেনাবাহিনীকে ডাকা হয়েছে।’

জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেওয়া আরেক রোহিঙ্গা নূর আলম বলেন, ‘প্রতিদিনই গুলিবর্ষণ করা হচ্ছে। আর ১০টির অধিক ক্যাম্প করেছে বিজিপি। তারপরও রাতে কাঁটাতারের পাশে এসে দাঁড়িয়ে থাকে সেনাবাহিনী। নতুন করে তৈরি করছে বাংকার। এতে আমরা আতঙ্কিত।’

তিনি বলেন, ‘জিরো পয়েন্টে যে খালটি রয়েছে সে খালটিতে নতুন করে ব্রিজ তৈরি করছে মিয়ানমার। এ ব্রিজ নির্মাণ হলে জিরো পয়েন্টে রোহিঙ্গারা থাকতে পারবে না। এ ছাড়া, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনারপাড়ার লোকজনও থাকতে পারবে না। কারণ বর্ষা মৌসুমে পানিতে তলিয়ে যাবে এই ব্রিজের কারণে।’
 
এবার শূন্যরেখা থেকে রোহিঙ্গাদের সরাতে নতুন পাঁয়তারা শুরু করেছে মিয়ানমার। যার কারণে তমব্রু খালে নতুন করে তৈরি করছে ব্রিজ। এ ব্রিজ নির্মাণ হলে খালে পানির স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্ন ঘটবে এবং বর্ষা মৌসুমে শূন্যরেখা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরের কোনারপাড়াসহ কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে দাবি স্থানীয়দের।

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ঘুমধুম ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুরুল কবির বলেন, ‘মিয়ানমারের উদ্দেশ্য হচ্ছে জিরো পয়েন্ট থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দেওয়া। এজন্য তারা তুমব্রু খালে ব্রিজের নামে বাঁধ দিচ্ছে। এতে খালের ওপর এ ব্রিজ হলে আমাদের স্থানীয়দের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হবে। বর্ষা মৌসুমে খালের পানি আটকে গিয়ে আমাদের কৃষি জমি ও পুরো এলাকা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে যাবে।’

তবে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, খালে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে।

উল্লেখ্য, তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাকে চিকিৎসাসহ মানবিক সহায়তা দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা রেড ক্রস।

উপরে