ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ
মহান স্বাধীনতা দিবসে বীর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে বাঙালি জাতি। সর্বস্তরের জনতার পুষ্পাঞ্জলিতে ভরে উঠছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
ভোর থেকে বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নানা রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ হাজির হয়েছেন সেখানে। বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ।
মাইকে নাম ঘোষণা না করায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বর্জন
এছাড়া স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ থেকে অনবরত মুক্তিযুদ্ধের সময়কার দেশাত্মবোধক গান শোনা যাচ্ছে। দেশের অন্যান্য এলাকায়ও স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ভোর ছয়টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতাযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি প্রথম ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শ্রদ্ধা জানান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, ভাষাসৈনিক, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা।
আওয়ামী লীগ ছাড়াও দলটির অঙ্গসংগঠন, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সৌধ। লাল সবুজ পতাকা ওড়তে থাকে হাতে হাতে। শিশু কিশোরদের গালে আঁকা জাতীয় পতাকা, স্মৃতিসৌধ সবার মধ্যে অন্য ধরনের অনুভূতি জাগায়।
ধানমন্ডি থেকে বেলাল হোসেন তার পরিবার নিয়ে এসেছিলেন। তার বড় মেয়ে অদৃতা হোসেন বলেন, দুর্নীতিমুক্ত নতুন দেশ গড়ার শপথ নিয়ে স্মৃতিসৌধে এসেছি। আমরা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই। স্মৃতিসৌধে রাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠন ছাড়াও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও এসেছিলেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
স্মৃতিসৌধে সবাই যে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন এমন নয়। জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ ছুটে এসেছেন স্মৃতিসৌধে। টঙ্গী থেকে পতাকা বিক্রি করতে স্মৃতিসৌধে এসেছেন আসলাম। তিনি বলেন, অন্যরা ফুল দিতে স্মৃতিসৌধে এলেও তিনি এসেছেন পতাকা বিক্রি করতে। তবে নিজে শ্রদ্ধা জানাতে না পারলেও সবাই স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন এটা দেখে তিনি তৃপ্তি পাচ্ছেন।
রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি দলে দলে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, আধাসরকারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা যেন মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।