সিকৃবির ছাত্র হত্যা: আল্টিমেটামের শেষ দিনে উত্তপ্ত সিলেট
বাস চাপায় নিহত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের(সিকৃবি) ছাত্র হত্যার তিন দিনের আল্টিমেটামের শেষ দিনেও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সিলেট।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে সিকৃবির শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এরপর সিলেট নগরীর টিলাগড়ের মাদানী শাহী ঈদগাহ পয়েন্টে অবরোধ করে।
এই সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন, পরীক্ষা স্থগিত ও বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির পর হুশিঁয়ারি উচ্চারন করে ৫ দফা দাবি জানায়।
তিনদিনের কর্মসূচির শেষ দিনে এসে শিক্ষার্থীরা দাবি দাওয়া মেনে না নিলে আন্দোলন আরও জোরালো করার ঘোষণা দেয়।
গত ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় ঢাকা-সিলেট রোডের শেরপুর এলাকায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ওয়াসিম আব্বাসের সাথে উদার পরিবহন নামের বাসের ভাড়া নিয়ে বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উদার পরিবহন বাসের সহকারী শিক্ষার্থী ওয়াসিমকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে ঘটনাস্থলে বাসের চাকার নিচে পড়ে তার মৃত্যু হয়। এই খবরে সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরের দিন (২৪ মার্চ) সিলেটের চৌহাট্টা পয়েন্টের রাজপথ অবরোধ করে। তারা ৫ দফা দাবি জানায়।
এই কর্মসূচি পালন করে মৌলভীবাজার জেলাতেও। ইচ্ছাকৃত ছাত্র ওয়াসিমকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ওই স্থানের শিক্ষার্থীরাও। দেওয়া হয় তিনদিন আল্টিমেটাম। আজ ছিল তিনদিনের আল্টিমেটামের শেষ দিন।
আন্দোলনকারীরা শেষ দিনে এসে সিকৃবি’র ছাত্র ওয়াসিম হত্যার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করার ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে জানানো হবে ৫ দফা দাবি। দাবিগুলো হলো- বাসের অভিযুক্ত চালক ও সহকারীর ফাঁসি দ্রুত কার্যকর করা, উদার পরিবহনের রুট পারমিট ও লাইসেন্স বাতিল করা, লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি মহাসড়কে চলতে না দেওয়া, অদক্ষ চালক দিয়ে গাড়ি না চালানো এবং সড়কে শিক্ষার্থীসহ সকল যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এদিকে ২৫মার্চ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ডু ছাত্র ওয়াসিম হত্যার বাদী হয়ে মৌলভীবাজার সদর থানায় বাসের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং -২২)।
পরে এই মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ড্রাইভার ও সহকারীকে অভিযান চালিয়ে আটক করে পুলিশ। বুধবার (২৭মার্চ) মৌলভীবাজার চিপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি বাস চালক জুয়েল আহমদ(৩০), হেলপার মাসুক মিয়া (৩১) ও সুপারভাইজার শেফুল মিয়াদের (৩৫) ১০ দিনের জন্য রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মৌলভীবাজার মডেল থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন।
শুনানি শেষে আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট কাজী বাহা উদ্দিন আসামিদের ৫দিনের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করে। বাসের সুপারভাইজার শেফুল মিয়া এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
নিহত শিক্ষার্থী ওয়াসিম ছিলো হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের রুদ্র গ্রামের ঘোরী মো. আবু জাহেদ মাহবুব ও ডা. মীনা পারভিন দম্পতির এক মাত্র সন্তান। আর সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের(সিকৃবির) বায়োটেকনোলজি এ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
নিউইয়র্ক মেইল/সিলেট, বাংলাদেশ/২৭ মার্চ ২০১৯/অমিতা সিনহা/এইচএম/