রক্ষা পাচ্ছে শতবর্ষী ভবন, একাংশে হবে আধুনিক হাসপাতাল
সিলেটের শতবর্ষী আবু সিনা ছাত্রাবাস আর ভাঙা হবে না। এটি রক্ষণাবেক্ষণ করে ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে নমুনা হিসেবে রাখা হবে। আর ছাত্রাবাসের একাংশে আধুনিক হাসপাতাল স্থানান্তর করা হবে।
নগরীর দেড়শ বছরের পুরনো একমাত্র এই ঐতিহাসিক স্থাপনা ‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’র একটি অংশকে রাখা হবে নমুনা হিসেবে আর বাঁকি অংশ ভেঙ্গে নির্মাণ করা হবে আধুনিক সদর হাসপাতাল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
গত ফেব্রুয়ারী মাস থেকে সিলেটের ঐতিহাসিক স্থাপনাকে ভেঙ্গে ২৫০শয্যা আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তুতি নেয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে সরকারীভাবে। কিন্তু চোখে সামনে পুরাতন ঐতিহাসিক স্থাপনা ‘আবু সিনা ছাত্রাবাসের ধ্বংশ নিয়ে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে সিলেটের সচেতন মহলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী।
ঐতিহাসিক এই স্থাপনা রক্ষার্থে শুরু হয় একের পর এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন। এরপর সরেজমিন পরিদর্শনে এসে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত পরিদর্শনকালে বলেছিলেন, আবু সিনা ছাত্রাবাসকে ধ্বংশ করে নয়, সংস্কার ও সংরক্ষণ করে যাদুঘর হিসেবে রাখা হবে পুরাতন ঐতিহাসিক স্থাপনাটি।
আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) জেষ্ঠ্য ভাইয়ের কথাগুলো খোলাসা করলেন অনুজ ড.এ কে আব্দুল মোমেন । দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন হেলিকপ্টারযোগে সিলেট সফরে আসেন।
এই সময় উপস্থিতি বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও গনমাধ্যমকর্মীদের সাথে আবু সিনা ছাত্রাবাস নিয়ে কথার জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, যারা বলছে পুরনো বিল্ডিং, আমরা সেখানে চিন্তা করছি ছোট একটা অংশ নমুনা হিসেবে রাখবো। কেননা এটাকে সংস্কার করার কোন উপায়ও নাই এবং অন্য জায়গায় জায়গা পাওয়ার সমস্যা। সুতরাং যত তাড়াতাড়ি পারি আমরা ওই বিল্ডিংটা যাতে কাজ শুরু হয় মানুষের জন্য। কারণ এটা যদি হারায় আবার কবে যে নতুন হাসপাতাল হবে আমি জানিনা। সুতরাং এখানে বাধা না দিলে আমি খুশি হবো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত তিন বছর ধরে সিলেটে আনাগোনা করছি। ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের যে দূর অবস্থা অনেকেই প্রকাশ করেছেন। আমি ওখানে গিয়েও দূর অবস্থা দেখেছি। যে ৫০০ বেডের অরিজিনাল হাসপাতাল, সেখানে ২২শ’ লোক থাকে। হাসপাতালে ভীড় বেশি। পরবর্তিতে একটু উন্নতি হয়েছে। এখন আরও উন্নতি হয়েছে। নতুন বিল্ডিং হচ্ছে। বাট নট এনাফ। সেবা এখনো তত দূর এগুতে পারিনি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অনেক হয়েছে। নতুন বিল্ডিং হয়েছে। ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো।
তিনি বলেন, আমরা দশটা আইসিইউ খুলেছি, তিনটা থেকে। এগুলোর অনেক কাজ আর এগুলোর অনেক কাজও রয়ে গেছে।
আন্দোলনকারীদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের শহরে অনেক হাসপাতাল দরকার। ২৫০ বেডের হাসপাতাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করে গেছেন। বেশ দেন-দরবার করে এটা আমরা পেয়েছি। টাকা আসছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জায়গা পাওয়া সিলেটে খুবই কঠিন। এমন জায়গায় যেখানে হাসপাতাল আছে। দুনিয়ার সব দেশে যেখানে একাধিক হাসপাতাল থাকে, তাদের অনেক সময় ইকুবমেন্ট চালাচালি হয়। এই কিছুদিন আগে ওবায়দুল কাদের সাহেবের অসুস্থ হয়ে গেলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ল্যাব থেকে ইকুবমেন্ট আনতে হলো। কাছাকাছি থাকলে অনেক সুবিধা । নার্সের সুবিধা, ডাক্তারদেরও সুবিধা। তাই আমি মনে করি, এই জায়গাতেই আমাদের ২৫০ বেডের সদর হাসপাতাল হওয়া উচিত। মানুষের তাগিদে, জনগনের তাগিদ হচ্ছে ভালো হাসপাতাল।
নিউইয়র্ক মেইল/সিলেট, বাংলাদেশ/১৭ এপ্রিল ২০১৯/অমিতা সিনহা/এইচএম