রাজধানীতে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ
রাজধানী ও এর আশপাশে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। রোগীর ভিড় বাড়ছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, আইসিডিডিআরবি হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে।
কলেরা হাসপাতাল নামে পরিচিত আইসিডিডিআরবি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ১৫ এপ্রিল ৯১৮, ১৬ এপ্রিল ৯২৩ ও ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯১৮ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আইসিডিডিআরবিতে রোগীর ভিড় বাড়ছে প্রতিদিনই। জায়গার অভাবে বারান্দা, এমনকি গবেষণার জন্য নির্ধারিত স্টাডি ওয়ার্ডে বাড়তি শয্যা দিয়ে চিকিৎসা চালানো হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, হঠাৎ ডায়রিয়া বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ আবহাওয়া পরিবর্তন ও অধিক উষ্ণতা। পাশাপাশি দূষিত পানির প্রকোপও রয়েছে।
আইসিডিডিআরবির তথ্যমতে, ১০ থেকে ১২ দিন ধরে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। ডায়রিয়া থেকে রক্ষায় পানি ফুটিয়ে খাওয়া, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও নিরাপদ খাদ্যের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহে দেশের মোট ৯টি জেলার তথ্যমতে ৩ হাজার ৪৭০ জন ও গত ১ মাসে ১২টি জেলায় ১৫ হাজার ৫৭৩ জন ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেস।
তবে অধিদফতরের ইন্টারনেট সার্ভার নষ্ট থাকায় সারা দেশের ডায়রিয়া রোগীদের তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। আইসিডিডিআরবির চিফ কনসালটেন্ট ডা. আজহারুল ইসলাম বুধবার রাতে বলেন, প্রায় ১০ থেকে ১২ দিন ধরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।
হাসপাতালে প্রতিদিন ৯০০ থেকে ৯৫০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এর মধ্যে ৭০ ভাগ রোগী প্রাপ্তবয়স্ক। বাকি ৩০ ভাগ শিশু। নগরীর মিরপুর, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণখান এলাকাগুলোতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি হওয়ায় সেখান থেকেই বেশি সংখ্যক রোগী আসছেন।
তিনি বলেন, ডায়রিয়া থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকার জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। যে কোনো খাবার গ্রহণের আগে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। রাস্তার পাশের খোলা খাবার, শরবত ইত্যাদি থেকে বিরত থাকাই ভালো। এমনকি হোটেলের খাবারের সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
রোগীকে স্বাভাবিক খাবার খাওয়ান। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুকে মায়ের দুধসহ অন্যান্য খাবার বারে বারে খেতে দিন। প্রয়োজনে স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ডায়রিয়ার মাত্রা বেশি হলে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে।