ঐক্যফ্রন্টকে কাদের সিদ্দিকীর ‘কড়া’ চিঠি
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পরিচালনায় অনেক অসঙ্গতি রয়েছে দাবি করে জোটের শীর্ষ নেতাদের চিঠি দিয়েছেন শরিক দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী।
শনিবার দলটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার স্বাক্ষরিত এ চিঠি সংশ্লিষ্টদের পৌঁছে দেওয়া হয়।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের পক্ষ থেকে চিঠিতে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে গত বছরের ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও অন্যান্য যেকোনো সংকট মুহূর্তে আমরা এবং আমাদের নেতা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম যথাযথ ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছেন। বর্তমান ভয়াবহ রাজনৈতিক অবক্ষয়ের মুহূর্তে আপনার পদক্ষেপ জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ মনে করে গত ৫ নভেম্বর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আপনার ফ্রন্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ফ্রন্টের অনেক কার্যক্রমই স্পষ্ট নয়। নির্বাচন পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোয় ব্যর্থ, প্রহসনের নির্বাচনী নাটক প্রত্যাখ্যান পরবর্তীতে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর এবং তারও পরে গণফোরামের মোকাব্বির খানের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া। তাকে গেট আউট করে দেওয়া। সর্বশেষ গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে তার শরিক হওয়া মানুষের মধ্যে মারাত্মক বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। রাস্তা-ঘাটে এসব প্রশ্নের জবাব দেওয়া যাচ্ছে না।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে ধর্ষণ ও হত্যা মহামারি আকার ধারণ করেছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট হিসেবে এর প্রতিকারে তেমন কোনো ভূমিকা রাখা যাচ্ছে না বা হচ্ছে না। গত ৩০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার মুক্তি, নুসরাত হত্যা ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে শাহবাগ চত্বরে গণজমায়েত কেনো কীভাবে বাতিল করা হয়েছে, আমরা এসবের বিন্দুবিসর্গও জানি না। সর্বোপরি বিএনপির ছয় সদস্যের মধ্যে একজন শপথ নিলে তাকে বহিষ্কার, পরবর্তীতে শপথ নেওয়া চারজনকে স্বাগত জানানো এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়া- এসব জাতীয় প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।
এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (০৯ মে) মতিঝিলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বর্ধিত সভা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে। তাই অনুরোধ জানাচ্ছি, জনগণের মনে আপনার নেতৃত্বের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে যেসব প্রশ্ন জেগেছে, তার যথাযথ প্রতিকার-প্রতিবিধান করা হোক। তা না হলে বেদনার সঙ্গে ৯ জুনের পরবর্তী দু’একদিনের মধ্যে প্রয়োজনে আরও ব্যাপক আকারে বৈঠক করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হবো।
সদয় অবগতির জন্য এ চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাসদ সভাপতি আসম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও সুব্রত চৌধুরীকে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (০৯ মে) সংবাদ সম্মেলন করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, জনগণের মনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে যেসব প্রশ্ন জেগেছে, তার যথাযথ প্রতিকার-প্রতিবিধান না করলে দলীয় ফোরামে আলোচনার পর ঐক্যফ্রন্ট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দল।