শিরোনাম
আগে চারজন দাঁড়াত, এখন একটা মারলে ৪০ জন দাঁড়াবে: ড. ইউনূস প্রযুক্তিগত ত্রুটি, যুক্তরাষ্ট্রে বিমান চলাচল বন্ধ গিনিতে ফুটবল ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১০০ নিহত রাশিয়ার ‘হাইব্রিড আক্রমণ’ নিয়ে সতর্কতা জার্মানির ভারতে মসজিদে ‘সমীক্ষা’ চালানো ঘিরে সংঘর্ষ, নিহত ৩ সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর সাগরে ডুবে গেল বাংলাদেশ থেকে ফেরা সেই রুশ জাহাজ নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 21 August, 2019 20:43

অনিশ্চিয়তায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

ফিরে যেতে রোহিঙ্গাদের চার শর্ত
অনিশ্চিয়তায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

সুজাউদ্দিন রুবেল, কক্সবাজার থেকে: বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আবারও অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। প্রত্যাবাসনের জন্য ছাড়পত্র দেয়া ৩ হাজার ৪শ ৫০ জন রোহিঙ্গার মধ্যে মঙ্গলবার ২১ পরিবারের সাক্ষাৎকার নিয়েছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনে সম্মত কিনা সে বিষয়ে মুখ খোলেনি জাতিসংঘ এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার। তবে জাতিসংঘকে সাক্ষাৎ দেয়া অনেক রোহিঙ্গা বলছে; চারটি শর্ত মানলেই তারপর মিয়ানমারে ফিরে যাবে তারা। আর স্থানীয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম পরিষদের অভিযোগ, প্রত্যাবাসন বাধাগ্রস্ত করতে পাঁয়তারা করছে জাতিসংঘসহ এনজিও সংস্থাগুলো। 

গত বছরের ৩১ অক্টোবর প্রত্যাবাসনের জন্য ২২ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। এরই প্রেক্ষিতে আগামী ২২ আগস্ট ৩ তিন হাজার ৪শ ৫০ জন রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনে ছাড়পত্র দেয় মিয়ানমার। ফলে তালিকাভুক্ত এসব রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনে প্রস্তুতি শুরু করে সরকার। কিন্তু প্রত্যাবাসনের খবর শুনার পর ক্যাম্পে নানা ধরণের প্রত্যাবাসন বিরোধী অপপ্রচার শুরু করে এনজিওগুলো। 

২৬ নম্বর ক্যাম্পের এ-ব্লকের রোহিঙ্গা আব্দু জব্বার (৪৫) বলেন, ‘ডব্লিউএফপি, ইউএনএইচসিআর ও এক্সফাম সংস্থা রয়েছে। তারা প্রত্যাবাসন নিয়ে আমাদের বলেছে সরকার তোমাদের চলে যেতে বলছে; তোমরা কিভাবে যাবে’।

২৬ নম্বর ক্যাম্পের ডি-২ ব্লকের রোহিঙ্গার রশিদ উল্লাহ (৩০) বলেন, ‘ডব্লিউএফপি, ইউএনএইচসিআর ও এক্সফামসহ শতাধিক এনজিও রয়েছে। তারা আমাদেরকে বলছে; স্বাভাবিক সুন্দরভাবে যদি বিচার হয় তাহলে তোমাদেরকে দেশে পাঠাবো। না হয় তোমাদের এখানে না মরা পর্যন্ত আমরা সাহায্য করে যাবো এই কথাগুলো বলেছে’।

এরপর প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের ঘরে ঘরে গিয়ে বিষয়টি অবগত করে ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। তারপর মঙ্গলবার সকাল থেকে রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার শুরু করে জাতিসংঘ। সাক্ষাৎকারে অনেক রোহিঙ্গা আসলেও আবার অনেকে আসেনি। আর যারা এসেছেন তারা বলছেন, চারটি শর্ত মানলেই তারপর মিয়ানমারে ফিরে যাবেন তারা।

টেকনাফ শালবাগান আই ব্লকের আই-৯ শিডের রোহিঙ্গা রুহুল আমিন (৭০) বলেন, মিয়ানমার ফিরে যেতে এখনো আমরা রাজি আছি। তবে মিয়ানমারে সকল মুসলমান নাগরিকের অধিকার মিয়ানমারকে মেনে নিতে হবে।

একই ব্লকের রোহিঙ্গা রশিদ আমিন (৪০) বলেন, চারটি শর্ত মেনে নিলেই তারপর মিয়ানমারে ফেরত যাব। শর্তগুলো হল: পূর্ণ নাগরিকতার অধিকার, কোন ট্রানজিট ক্যাম্প নয়, নিজ  ভিটেতে ফিরবে তারা, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের উপস্থিতি নিরাপত্তার খাতিরে এবং অন্যান্য নাগরিকের মতই নিরাপত্তা দিতে হবে। তাহলেই স্বেচ্ছায় স্বদেশে ফিরে যাব।

জাতিসংঘসহ এনজিও সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত না যেতে ইন্ধন দিচ্ছে বলে জানালেন রোহিঙ্গা প্রতিরোধ ও প্রত্যাবাসন সংগ্রাম পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহামুদুল হক চৌধুরী।

তিনি বলেন, বিশেষ করে ক্যাম্পের ভেতরে-বাইরে ইউএনএইচসিআর সহ যেসব এনজিও সংস্থাগুলো কাজ করছে তারা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত না যাওয়ার জন্য ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। তাদের নিরাপত্তাজনিত অভাব, আরও বিবিধ অসুবিধার কথা জানিয়ে রোহিঙ্গাদের ইন্ধন দিচ্ছে। ফলে রোহিঙ্গারা এখানে বসে বসে ভাল খাবার-দাবার ও ভাল সুযোগ-সুবিধা ছেড়ে কথিত অনিরাপদ স্থানে যাবে কিনা এটি অন্তত সন্দেহের বিষয়।  

আর শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান, প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকান্ডে কোন এনজিও সংস্থা জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

গত বছরের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য দিনক্ষণ ও সব ধরণের প্রস্তুতি থাকলেও মিয়ানমারে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হয়নি জাতিসংঘের এমন দোহাই এবং রোহিঙ্গাদের প্রতবাদের মুখে প্রত্যাবাসন আর হয়নি।

 

উপরে