অশ্রুসিক্ত নয়নে পুণ্যার্থীদের দেবী বিসর্জন
ঢাক-শঙ্খ-উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মের পুণ্যার্থীরা অশ্রুসিক্ত নয়নে বিসর্জন দিলেন ত্রিনয়নী দেবী দুর্গা মাকে। আনন্দ উৎসব মুখর পরিবেশে মহা ষষ্ঠী থেকে নানা আয়োজনের পালিত হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বৃহত্তম শারদীয় দুর্গোৎসব মহা দশমীর শেষ বিকেলে সম্পন্ন হয়।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীর নারীরা সিঁদুর রঙে রাঙিয়ে দেন ত্রিনয়নী দেবী দুর্গা মাকে। পরে তারা একে অপরের গায়ে রবেরঙের রঙ মেখে দেবীকে বিসর্জন দিতে আসে সিলেটের চাঁদনী ঘাটে। ক্বীং বিজ্র সংলগ্ন চাঁদনীঘাটে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় দেব-দেবী বিসর্জন। কড়া নিরাপত্তায় মধ্য দিয়ে সিলেটে দেবী দুর্গার বিসর্জন শুরু হয় আনুষ্ঠানিকভাবে।
এই সময় সিলেটের পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট মহানগর শাখা প্রতিমা বিসর্জন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেন মঞ্চস্থ এর মাধ্যমে। তারা সিলেটের ৬শ’ ৮টি পূজা মন্ডপের দেব-দেবীর প্রতিমা বির্সজন সম্পন্ন করে সারি বদ্ধভাবে।
এই সময় পুণ্যার্থীদের দেবী দশভুজা মাকে চাঁদনীঘাটে শেষ বিসর্জন দিতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পরে। সহস্রাধিক পুণ্যার্থীর ও দর্শনার্থীরা ভিড় করেছিলো চাঁদনীঘাটে দেবী দুর্গা মাকে এক পলক দেখার জন্য। প্রতিবছরের মতো এবারও মা দেবী দুর্গা কৈলাস থেকে এসেছিলেন স্বামী শিব, পুত্র কার্তিক, গণেশ আর কন্যা সরস্বতী ও লক্ষীকে সঙ্গে নিয়ে মর্ত্যরে পিত্রালয়ে। টানা পাচঁ দিন ব্যাপী মর্ত্যরে সকল অশুভ শক্তি বিনাশ করে আবার মা দেবী দুর্গা ফিরে গেলেন স্বামীর কৈলাসে। এই সময় মায়ের রেখে যাওয়া শুভ প্রতিক নিয়ে বিজয় দশমীর আনন্দে মেতে উঠে সনাতন ধর্মের অনুসারীরা। শুভ বিজয় দশমীর মুহুর্তে হিন্দুধর্মাবলম্বীরা একে অপরের প্রণাম নিবেদন করে মিষ্টি মুখে বরণ করেন।
সিলেটে এবার চাঁদনীঘাটে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন - সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান ও হিন্দু ধর্মের পূজা কমিটির অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
প্রতিমা বিসর্জন কোন ধরণের বিঘ্ন যেন না ঘটে এজন্য পুরো চাঁদনীঘাট জোরে বসানো হয়েছিলো সিসি ক্যামেরা। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ, আনসার, ডিবি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা সক্রিয়ভাবে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল।