বুয়েটে মাঠের আন্দোলন স্থগিত, তবে একাডেমিকে অংশগ্রহণ নয়
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হওয়া আন্দোলন স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বুয়েট শিক্ষার্থীরা মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
তবে মামলার চার্জশিট দাখিলের পর আসামিদের স্থায়ী বহিস্কার না করা পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ না নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সেইসঙ্গে নতুনভাবে পথচলা শুরু করতে বুধবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গণশপথ অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এদিকে আবরার হত্যাকাণ্ডের পর সরকার, বুয়েট প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।
আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ এবং বিচারসহ ১০ দফা দাবিতে ছয়দিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে আন্দোলন (১৩ ও ১৪ অক্টোবর) দুদিনের জন্য শিথিল করেছিলেন।
এরপর মঙ্গলবার থেকে ফের আন্দোলন শুরুর কথা থাকলেও তা স্থগিতের ঘোষণা আসল।
প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে গত ৫ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ।
এর জেরে পরদিন ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ইতিমধ্যে পুলিশ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছেন। ১৩ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন, অনীক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ইফতি মোশারেফ, বুয়েট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ ওরফে মুন্না, ছাত্রলীগের সদস্য মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম ওরফে তানভীর, মোহাজিদুর রহমানকে, শামসুল আরেফিন, মনিরুজ্জামান ও আকাশ হোসেন, মিজানুর রহমান (আবরারের রুমমেট), ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা এবং হোসেন মোহাম্মদ তোহা।
এদের মধ্যে ১৯ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং বুয়েটে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি।