'নারীদের বিদেশে চাকরির অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারি না'
নারীদের বিদেশে চাকরি করার অধিকার থেকে আমরা তাদের বঞ্চিত করতে পারি না। তবে যদি বিশেষ কোন চাকরিতে নারীরা নির্যাতনের শিকার হন, সেই চাকরিতে নারীদের পাঠাবো কি না তা আমরা বিবেচনা করব।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে সিলেট জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সিলেট সিটি করপোরেশনের সীমানা সম্প্রসারণ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১আসনের সংসদ সদস্য ড. একে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, বিদেশে আমাদের দেশের প্রায় ৬ লাখ নারী শ্রমিক রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার নারী শ্রমিক শুধু সৌদি আরবে রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়য়ের এক শিক্ষকের গবেষণায় দেখা যায় যে, গত চার বছরে ৫১ জন নারীর লাশ দেশে এসেছে। যা চার বছরে ৬ লাখ শ্রমিকের মধ্যে ৫১ জনের লাশ দেশে আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ এদের অনেকের স্বাভাবিক মৃত্যুও হতে পারে। এই মৃত্যুকে নিয়ে অনেকে বিদেশে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করার দাবি তুলছেন। বিদেশে গিয়ে কেউ নির্যাতিত হলে তাকে সাহায্য করার জন্য দূতাবাসগুলোতে ২৪ ঘন্টা হটলাইন খোলা হয়েছে। মিশনগুলোতে নির্যাতিতদের জন্য আশ্রয়েরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, সৌদিআরবের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। তাই সেখানে কেউ যেতে চাইলে আগে চাকরির ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে বৈধভাবে যাওয়া উচিত। বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের জীবনমান ও আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধিতে সরকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। বিদেশে প্রবাসীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে তারা দক্ষতা অর্জন করে সেখানে কাজ করতে পারে। এতে প্রবাসে তাদের আয়ও বাড়বে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সীমানা সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, উন্নয়ন ও সেবা বৃদ্ধির জন্যেই সিলেট সিটি কর্পোরেশনের(সিসিক) পরিধি সম্প্রসারণ জরুরি, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পরিধি বাড়লে সেবার মানও বাড়বে। সিসিকের আওতায় নতুন নতুন এলাকা অন্তর্ভুক্ত হলে এসব এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত হবে। আরও বেশি মানুষকে নাগরিক সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে। এতে অধিকতর রাজস্ব আদায়ও হবে। শহর বড় হলে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।
দেশের বৃহত্তর শহরের সাথে তুলনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, দেশের সবগুলো বড় শহরে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। খুলনা ও রাজশাহীতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থাকলেও আমাদের সিলেটে নেই। সে জন্য উন্নয়ন ও সেবা বৃদ্ধির জন্যেই সিসিকের পরিধি সম্প্রসারণ জরুরি। শহর বড় হলে এ দাবি আরও জোরালো হবে। তখন আমরা বলতে পারবো সিলেট অনেক বেশি মানুষের শহর। তাই সিলেটেও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করতে হবে।
আলোচনা সভায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনকে পৃথক প্রস্তাবনা তৈরির নির্দেশনা দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
তিনি আরও বলেন, করপোরেশনের সম্প্রসারণের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা চাই ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়, জনগণকে সম্পৃক্ত করে সবার জন্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় সিলেট জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন - সিলেট ৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ ও বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা।