মামলা করতে খরচ লাগছে দুই টাকা!
বাগেরহাট জেলার রামপাল থানার বাইনতলা ইউনিয়নের গ্রাম আদালতের সুবিধা পাচ্ছে প্রান্তিক মানুষ। কম খরচে অতি দ্রুত সময়ে ছোটেখাটো অপরাধের বিচার নিস্পত্তির জন্য এই আদালত সল্প সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
ব্যাপক কার্যক্রমের জন্য চলতি বছর গ্রাম আদালতের জেলা পর্যায়ে বাইনতলা ইউনিয়ন ২য় স্থান অর্জন করেছে।
সূত্রে প্রকাশ,পল্লীগ্রামের অধিকারবঞ্চিত জনগোষ্ঠির ন্যায়বিচারের সুবিধার্থে ১৯৭৬ সালে গ্রাম আদালত বিধিমালা প্রণীত হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল থেকে এর সুবিধা পেতে শুরু করে প্রান্তিক মানুষ। পরে ২০১৩ সালে সেটি সংশোধন করা হয় এবং এখনও পর্যন্ত কার্যক্রম চলমান আছে।
বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করন দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের আওতায় উপজেলা বাইনতলা ইউনিয়নে ২০১৭ সাল থেকে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২০৭ টি মামলা গ্রহন হয়েছে এবং ১৬৪ টি মামলা নিস্পস্তি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ১০ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরন আদায় করা হয়েছে। জমি উদ্ধার করা হয়েছে ৫৬.০৬ শতাংশ যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। এছাড়া সচেতনতামূলক কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন গ্রামে ৩২৫ টি উঠান বৈঠক,র্যালী,১২ টি ভিডিও শো,৩টি কমিউনিটি শেয়ারিং সহ বিভিন্ন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ফয়লাহাটের আরিফুজ্জামান ঢালী বাইনতলা ইউনিয়নের কুমলাই গ্রামের হাবিব খান এর কাছে কাঠ বিক্রয়ের ৩৬ হাজার টাকা আদায়ের জন্য গ্রাম আদালতে অভিযোগ দায়ের করে।
গ্রাম আদালত শুনানীর মাধ্যমে বিরোধ নিস্পত্তি করে পাওনা টাকা আদায় করেছে। মোঃ ফরিদ হোসেন জমি ক্রয় বাবদ শোলাকুড়া গ্রামের শেখ মজিদ এর নিকট থেকে ৩০হাজার টাকা ফেরত পান।এছাড়া মোঃ হাসিনা বেগমের চুরি যাওয়া হাস বাবদ ১৮০০ টাকা,কাশিপুরের শাহিদা বেগমকে অন্যায়ভাবে মারপিট করায় জরিমানা ১২০০ টাকা,শোলাকুড়ার কুলসুমা বেগমের ধারের ২০ হাজার টাকা গ্রাম আদালতের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে।
বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাত্র ২ টাকা খরচে এলাকার মানুষ গ্রাম আদালতের মাধ্যমে তাদের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছে। জেলা আদালতে যেমন সময়ক্ষেপন করা হয়, এখানে অতিদ্রুত সময়ে মানুষ সেবা পাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে গ্রাম আদালতের প্রতি তাদের আস্থা ও নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার এই সুফল জনগণ যাতে সঠিকভাবে পায় তার জন্য আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।