শিরোনাম
সব প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপে তৎপর ভারতীয় আমেরিকানরা টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের প্রথমবারের মতো ইউক্রেনে রাশিয়ার আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর গাজায় ১০০ ট্রাক ত্রাণ লুট করে নিল মুখোশ পরিহিতরা নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 1 March, 2020 02:21

করোনা প্রভাব : ৫০ ডলারে নেমে এসেছে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল মূল্য

করোনা প্রভাব : ৫০ ডলারে নেমে এসেছে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল মূল্য
স্বপ্না চক্রবর্তী, ঢাকা :

বিশ্বজুড়ে বর্তমানে সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম নভেল করোনাভাইরাস। চীনের উহান থেকে সূত্রপাত হয়ে যার বিস্তার ঘটেছে বিশ্বের আরও প্রায় ২৫ টি দেশে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন বাণিজ্য খাতেও। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাজারে এই ভাইরাসের প্রভাবে কমেছে জ্বালানি তেলের দাম। 

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল ৫০ ডলারে নেমে এসেছে। আর পরিশোধিত জ্বালানির তেলের দাম জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের তুলনায় এখন ব্যারেল প্রতি কমেছে ১৫ ডলার। তবে এটি আরো পাঁচ ডলারের মতো কমতে পারে বলে ধরনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এর থেকে মুনাফার আশা করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। 

বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কমায় লাভের ধারায় ফেরা সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছে রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটি।

বিপিসি সূত্র জানায়, গত ৬ জানুয়ারি বিপিসি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পরিশোধিত তেল কিনেছিল ব্যারেল প্রতি ৮০ দশমিক ৫০ ডলারে। এরই দুই দিন পর ৮ জানুয়ারি ব্যারেল প্রতি দাম বেড়ে ডলার কমে ৭৯ ডলারে দাঁড়ায়। এরপর থেকেই ক্রমান্বয়ে দাম কমতে শুরু করে। গত সপ্তাহে বিপিসি প্রতি ব্যারেল পরিশোধিত ডিজেল কেনে ৬৫ ডলারে আর রবিবার ২৩ ফেব্রুয়ারি যার দাম ছিল ৬৪ দশমিক ৪৮০ ডলার।

বিপিসির পরিচালক অপারেশন পরিবহন মোঃ সরওয়ার আলম বলেন, জানুয়ারির ৬ তারিখের হিসেব যদি আমরা ধরি তাহলে আমাদের চার কোটি ৪০ লাখ টাকা লোকশান হয়েছে। অন্যদিকে আমরা যদি বর্তমানের হিসেব ধরি তাহলে সাত থেকে আট কোটি টাকা লাভ হবে। তিনি বলেন, জানুয়ারির শুরুতে দাম বেশি ছিল কিন্তু শেষের দিকে দাম কমে আসায় আমাদের জানুয়ারিতে কিছুটা লাভ হয়েছিল।

বিপিসি সূত্র বলছে ব্যারেল প্রতি ডিজেলের দাম ৭০ ডলার পর্যন্ত হলে বিপিসি ব্রেক ইভেনে (লাভ লোকশান সমতা বিন্দু)  থাকে। আর ডিজেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৭০ ডলারের বেশি হলে লোকশান করে বিপিসি আর কম হলে লাভ করে।
বিপিসি প্রতি বছর যে তেল আমদানি করে এরমধ্যে ১৫ লাখ মেট্রিকটন অপরিশোধিত আর বাকিটা পরিশোধিত। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ইন্টার্ন রিফাইনারীতে পরিশোধন করা হয়। এখন বছর প্রতি ৬৫ লাখ মেট্রিকটনের মতো জ¦ালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। পেট্রোল এবং অকটেন দেশেই উৎপাদন করা হয়।

বিপিসির একজন কর্মকর্তা জানান, নিয়ম অনুযায়ী যে দিন জাহাজে তেল ভরা হবে সেই দিনের আগে ও পরের দুই দিন করে মোট পাঁচ দিনের গড় তেলের দাম হিসেব করেই তেলের দাম নির্ধরণ করা হয়। মাসে আট থেকে ১৪টি পর্যন্ত জাহাজ আসে। সঙ্গত কারণে জাহাজ যে যে দিন তেল লোড হবে ওই দিনের নির্ধারিত দামের উপরই লাভ লোকশান নির্ভর করে।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনা এশিয়া, ইউরোপ, অষ্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকাতে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে সব থেকে বড় ধাক্কা লেগেছে চীনে। উৎপাদন এবং পরিবহনে একক ব্যবহারকারী হিসেবে সব থেকে বেশি জ্বালানি তেল ব্যবহার করে চীন। গত ডিসেম্বর থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে চীনে এক ধরনের স্থবির পরিবেশ বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ সংক্রমন এড়াতে ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে বেশিরভাগ শিল্প কারখানা বন্ধ রেখেছে চীন। 

এই ধাক্কায় চীনে দৈনিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যাবহার কমেছে ৩০ লাখ ব্যারেল পর্যন্ত। যা এ যাবতকালের সব থেকে কম ব্যবহার বলে মনে করা হচ্ছে। কবে চীন এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আবার স্বাভাবিক হতে পারবে সে সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত নয়। তবে বাজারে তেলের দাম কমে আসলেও উৎপান কম হওয়াতে চীনা পন্যের দর বেড়েছে। চীনে তেলের ব্যবহার কমাতে তেল উৎপানকারী দেশগুলো তেলের দাম কমাতে বাধ্য হয়েছে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌরি বাজারে জ¦ালানি তেলের দাম সর্বনিন্ম পর্যায়ে রয়েছে। ভবিষ্যতে যা আরো কমতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা কমে করছেন। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৫০ ডলার। তবে এটি আরো পাঁচ ডলারের মতো কমতে পারে বলে ধরনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

জানতে চাইলে বিপিসি চেয়ারম্যান মোঃ সামছুর রহমান বলেন, মাস শেষে হিসেব করা বলা যাবে কি পরিমান লাভ হচ্ছে। তবে এখন দাম কমে আসাতে আমরা বলতে পারি বিপিসি লাভের ধারায় ফিরতে পারে। গত সপ্তাহে পরিশোধিত তেলের ব্যারেল প্রতিাম ৬৫ ডলার ছিল। 

বিপিসি সূত্র বলছে, ডিজেল সব থেকে বেশি বিক্রি হওয়া জ¦ালানি তেল। ডিজেলের লাভ লোকশানের উপরই বিপিসির লাভ লোকশান নির্ভর করে। বিপিসি আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভর করে শুধু মাত্র জেট ফুয়েল (বিমানে ব্যবহার্য) জ¦ালানির দাম নির্ধারণ করে। এছাড়া অন্যসব তেলের দাম সরকার নির্ধারণ করে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের হিসেবে লাভ করলেও আপাতত দেশের বাজারে জ¦ালানি তেলের দাম কমা বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

উপরে