শিরোনাম
আগে চারজন দাঁড়াত, এখন একটা মারলে ৪০ জন দাঁড়াবে: ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত ৩ গিনিতে ফুটবল ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১০০ নিহত রাশিয়ার রাসায়নিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান বোমা হামলায় নিহত ভারতে মসজিদে ‘সমীক্ষা’ চালানো ঘিরে সংঘর্ষ, নিহত ৩ সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর ভূমিকম্পে ভানুয়াতুতে নিহত বেড়ে ১৪ নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 16 April, 2020 23:22

দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টারযোগে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে সেনাবাহিনী

দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টারযোগে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে সেনাবাহিনী
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, সিলেট :

বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন দূর্গম এলাকায় বেসামরিক প্রশাসনের অনুরোধক্রমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ৩৬০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারের জন্য সরকারী ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হলো।

বর্তমানে ভয়াবহ করোনা ভাইরাস তথা কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ঘরে অবস্থানের নির্দেশনা পালিত হচ্ছে। সেই সাথে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ২৬ মার্চ হতে অফিস-আদালত, কল- কারখানা এবং স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গণপরিবহনের চলাচল। এছাড়া বিভিন্ন জেলায়  লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের দরিদ্র্য জনগোষ্ঠী বিশেষ করে খেটে খাওয়া দিনমজুর এবং প্রান্তিক জনগণ যেন খাদ্যসংকটে না পড়ে সে উদ্দেশ্যে সরকার ইতিমধ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় দূর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বান্দরবান পার্বত্য জেলাতেও সরকারের ত্রাণ সামগ্রী এসে পৌঁছায়। কিন্তু, বান্দরবান জেলার রুমা ও থানচি উপজেলার কতিপয় ইউনিয়ন দূর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় এবং সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় সরকারী ঐ সমস্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছিলো না। এ প্রেক্ষিতে, বান্দরবান জেলা প্রশাসন এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ঐ সমস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার জন্য বান্দরবান সেনা রিজিয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট সহযোগিতা কামনা করে। এমতাবস্থায়, বরাবরের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাৎক্ষনিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। 

যার প্রেক্ষিতে, আজ (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের (চট্টগ্রাম সেনানিবাস) সার্বিক সহযোগিতা ও তত্বাবধানে “আর্মি এভিয়েশন”-এর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে ঐ সমস্ত এলাকায় ৩,৭২০ কেজি ওজনের বিভিন্ন প্রকার ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়। 

উল্লেখ্য, ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, লবণ ও সাবান। এসকল ত্রান সামগ্রী বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলা এবং থানচি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ম্রো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৩৬০টি পরিবারের মাঝে স্থানীয় হেডম্যান, কারবারী ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। এ সময় বান্দরবান সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খন্দকার মোঃ শাহিদুল এমরান, মেজর ইফতেখার সহ স্থানীয় হেডম্যান এবং ঐসকল পাড়ার কারবারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

এ সময় বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার বলেন, “শান্তি, সম্প্রীতি এবং উন্নয়ন- এই মূল মন্ত্রকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্রগ্রামে দীর্ঘদিন যাবৎ অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে সন্ত্রাস দমন অভিযানের পাশাপাশি স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে”। 
    
এ ব্যাপারে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলা, শিক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানসহ সকল প্রকার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে”।
 
বান্দরবান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম সেনাবাহিনীর এই দ্রুত সহযোগীতার ব্যাপারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে গিয়ে বলেন, “দূর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় আমরা ঐ সমস্ত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে পারছিলাম না। বিষয়টি বান্দরবান সেনা রিজিয়নকে অবহিতপূর্বক অনুরোধ করার পর তাঁরা দ্রুততম সময়ে হেলিকপ্টারযোগে দূর্গম ঐ এলাকাগুলোতে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, আমি এইজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি”।

সরকারী ত্রাণ সামগ্রী হাতে পেয়ে স্থানীয় ম্রো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনসাধারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় পাড়ার হেডম্যান ও কারবারীরা বলেন, “মরণ ঘাতক করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আমরাও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের অন্যান্য সকল এলাকার মত ঘরে অবস্থান করছি। দেশব্যাপী গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে আমাদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারছিলাম না। এতে করে আমাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। পরিবার ও সন্তানদেরকে নিয়ে আমরা না খেয়ে মরার পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। এমন পরিস্থিতিতে আমাদেরকে ত্রাণ সরবরাহ করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সেনাবাহিনী প্রধান, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি”।

উপরে