বাড়ছে ঝুঁকি, ঢাকায় প্রবেশ ও বাহিরে নিয়ন্ত্রণ আরোপ
সাধারণ ছুটির মেয়াদ সর্বশেষ দফায় বৃদ্ধি করে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল ছুটিতে কেউ রাজধানী ঢাকা ছাড়তে পারবে না। কারণ ঢাকায় করোনা সংক্রমণ বেশি এবং সেটা যাতে গ্রামে গ্রামে না ছড়ায় সেজন্য এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
তবে, সরকারের এ নির্দেশ থোড়াই আমলে নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তারা যে যেমন পারছেন ঈদের আগে ঢাকা ত্যাগ করছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস, টেম্পু ও ট্রাক চেপে ছুটছেন গন্তব্যে। দক্ষিণের জেলাগুলোতে যাবার জন্য ভিড় বেড়েছে মাওয়া ও পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে। সেখানে ফেরির সংখ্যা বাড়িয়ে যাত্রী পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ অবস্থায় ফেরি ঘাটে, রিক্সা, টেম্পু বা মাইক্রোবাস ষ্ট্যান্ডে জনসমাগম ঠেকাতে বা সামাজিক দূরত্ব কার্যকর করতে প্রশাসনের নজরদারীতেও ঢিলে-ঢালাভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সোমবার পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে ছিল রীতিমতো অন্যান্য ঈদে বাড়িফেরা মানুষের ভীড়ের মতোই চাপ। এক পর্যায়ে ফেরি চলাচল বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ঘরে থাকার নির্দেশ ঢিলে করে কারখানা, মার্কেট খুলে দেয়ার প্রেক্ষিতে জনসমাগম বৃদ্ধি পাওয়া ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনা ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে কোভিড-১৯ অস্থায়ী হাসপাতালের কার্যক্রম উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা যখন দেখি যে বিভিন্ন যানবাহনে, বিশেষ করে রিকশায় সিএনজিতে জটলা পাকায়; অনেক লোক চলাফেরা করে; দোকানে, শিল্প কারখানার সামনে, ফেরিঘাটে অনেক লোক একত্রিত হয়। এসব দেখে আমরা আতঙ্কিত হই। সংক্রমণ তো বৃদ্ধি পাবে। আপনারা লক্ষ্য করছেন, সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। আমরা যদি বাইরে যাওয়া না কমাই তাহলে সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে।”
যদিও রোববার (১৭) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ঢাকা মহানগরীতে প্রয়োজন ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না অথবা নগরীর বাইরেও যেতে পারবেন না।
ডিএমপি জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আজ থেকে রাজধানীর প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে তল্লাশির ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি যাতে একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঢাকা শহরে প্রবেশ বা ঢাকা শহর থেকে বাইরে যেতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতেই তল্লাশির এই ব্যবস্থা।
ডিএমপি’র নির্দেশে বলা হয়েছে, রাজধানীতে যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া কোনো ব্যক্তি যানবাহন চালনা করলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে, জরুরি সেবা ও পণ্য সরবরাহ কাজে নিয়োজিত যানবাহন এই নিয়ন্ত্রণের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।