বাউল রণেশ ঠাকুরের ঘর বানিয়ে দেবেন আমেরিকা প্রবাসী সুফিয়ান
তোফাজ্জল লিটন:
সুনামগঞ্জের বাউল রণেশ ঠাকুরের নতুন ঘর বানিয়ে দেবেন আমেরিকা প্রবাসী সাদিকুর রহমান সুফিয়ান। এজন্য তিনি রণেশ ঠাকুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে আশ্বস্ত করেছেন। এই সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু হবে। শুধু ঘর নয়; তিনি সঙ্গীতের জন্য বাদ্যযন্ত্রও কিনে দিতে চান। এজন্য তিনি অন্যান্য মানুষের সহযোগিতা ও কামনা করেছেন।
আমেরিকা প্রবাসী সাদিকুর রহমান সুফিয়ান বলেন, আমি এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি জানার পর নিজের কাছে নিজেকে ছোট মনে হয়েছে। অনুতপ্ত হয়েছি। আমি বিশ্বাস করতে চাই না আমার এলাকায় এতো খারাপ মানুষ আছে যে বাউলের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে।
আমরা হাফিজুর-হালেমা ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সাধ্যমতো চেষ্টা করবো একটি ভালো মানের ঘর বানিয়ে দিতে। বাদ্যযন্ত্র কিনে দিতে। এ বিষয়ে অন্য মানুষ এগিয়ে এলে কাজটি আরও সহজ হয়ে যাবে। প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জন্য।
খবরে জানা যায়, সুনামগঞ্জে বাউল রণেশ ঠাকুরের চল্লিশ বছর ধরে সাধনার গানের বই ও বাদ্যযন্ত্রসহ গানের ঘরটাই জ্বালিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার বিকালে দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ ।
রণেশ ঠাকুর বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের শিষ্য। দিরাই থানার এসআই জহিরুল ইসলাম জানান, গভীর রাতে এ আগুন জ্বালানোর ঘটনা ঘটে। আগুনে বাউলের দোতরা, বেহালা, হারমোনিয়ামসহ গান গাওয়ার সব যন্ত্রপাতি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
“ঘরের একপাশে দুটো ভেড়া ছিল। এগুলো বের করে দিয়ে আগুন ধরানো হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।” পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রণেশ ঠাকুরের বসত ঘরের উল্টোদিকে তার বাউল গানের ঘর। ওখানেই তার ও শিষ্যদের বাদ্যযন্ত্র থাকত।
রোববার রাত ১১টায় পরিবারের সবাই ঘুমোতে যান। রাত ১টার পর রণেশ ঠাকুরের বড় ভাইয়ের স্ত্রী চিৎকার করে সবাইকে ডাকতে থাকেন। অন্যরা ঘুম থেকে উঠে দেখেন গানের ঘর পুড়ে যাচ্ছে। পরে আশপাশের লোকজন চেষ্টা করে আগুন নেভালেও পুরো ঘরই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
রণেশ ঠাকুর জানান, গ্রামের বা আশপাশের কারো সঙ্গেই তার কোন শত্রুতা নেই। কারা যে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তা তিনি বুঝতেই পারছেন না। বাউল সম্রাট শাহ্ আবদুল করিমের ছেলে নূর জালাল জানান, আগুনে রণেশ ঠাকুরের প্রায় চল্লিশ বছরের সাধনার সব যন্ত্রপাতি, গানের বইপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।