ছুটি বাড়ছে না, সীমিত পরিসরে চলবে গণপরিবহন
৩০ মে’র পর থেকে আর সাধারণ ছুটি বাড়ছে না। এছাড়া সীমিত আকারে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চলার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। যদিও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায়, উৎকণ্ঠা বাড়ছে দেশবাসীর মধ্যে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বুধবার সরকারের এ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, ৩০ মে'র পর থেকে থেকে সাধারণ ছুটি আর বাড়ানো হবে না। তবে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। এই সময়ে সব ধরণের বাস, রেল ও লঞ্চসহ সবধরণের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে বিমান সংস্থাগুলো বিমান চলাচল চালু করতে পারবে।
তবে পরবর্তীতে তিনি জানান, সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন জেলায় বাস, লঞ্চ ও রেল চলাচল ৩১ মে থেকেই চালু করা হবে। বিভিন্ন জেলায় পরিবহনে যাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াত করতে পারবেন।
তিনি বলছেন, ‘সীমিত বলতে আমরা বোঝাচ্ছি, গণপরিবহন চললেও তা নিয়ন্ত্রিতভাবে চলবে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৫ জুন পর্যন্ত ছুটি থাকবে। তবে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাস ও দূরশিক্ষণ চলবে। গণপরিবহন বলতে বাস, রেল ও লঞ্চ চলাচল বোঝানো হচ্ছে। পাশাপাশি বিমান চলাচল চালুরও অনুমতি দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো নিজ ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিমান চলাচল শুরু করতে পারবে। ব্যক্তিগত পরিবহন চলবে।’
এছাড়া ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিসে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বয়স্ক এবং গর্ভবতী মহিলারা অফিসে যোগ দেবেন না বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সীমিত পরিসরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলবে।
কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য কোন অফিস সীমিত আকারে পরিবহন চালু করবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত ওই প্রতিষ্ঠান নেবে। সভা-সমাবেশ বা গণজমায়েত বন্ধ থাকবে। মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ ও ধর্মীয় প্রার্থনা চলবে।
তিনি জানান, রাত আটটা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত মানুষজনের বাইরে বের হওয়ার ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, সেটা বহাল থাকবে। এই সময়ে অকারণে বাইরে বের হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের দোকানপাট সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখতে পারবে।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখতে সীমিত পরিসরে সব অফিস খোলার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান। এই বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৩ মার্চ সরকার প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে দ্বিতীয় দফায় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত, তৃতীয় দফায় ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ও চতুর্থ দফায় ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বর্ধিত করা হয়। এরপরও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পঞ্চম দফায় ১৬ মে এবং সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত ছুটি বৃদ্ধি করে সরকার।
গত বছরের ডিসেম্বরে সর্বপ্রথম চীন থেকে সংক্রমণ শুরুর পর করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এ পর্যন্ত ছড়িয়েছে বিশ্বের ২১২টি দেশ ও অঞ্চলে।
এদিকে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ১ হাজার ৫৪১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং ২২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন বলে বুধবার জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৫৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৮ হাজার ২৯২ জন।