রামপালে একটি সড়কে কয়েক হাজার গ্রামবাসীর ভোগান্তি
রামপালের শোলাকুড়া দক্ষিনপাড়া সংযোগ সড়কটির বেহাল দশায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ৷ একদিকে সদ্য খননকৃত রেকর্ডিয় খালে ভাঙ্গন অপরদিকে লাগাতর বৃষ্টির কারনে রাস্তার অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে ৷ আর শোলাকুড়া দক্ষিন পাড়ায় যাবার একমাত্র এই সংযোগ রাস্তার কারনে বিপাকে পড়েছে কয়েক হাজার গ্রামবাসী ৷
সরেজমিনে দেখাগেছে, রামপালের গিলাতলা মেইন রোড এর দেয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন তেতুলতলা এলাকা থেকে প্রায় ৩/৪ কি:মি ভিতরে বাইনতলা ইউনিয়নে অবস্থিত শোলাকুড়া দক্ষিনপাড়া গ্রাম ৷ কয়েক হাজার গ্রামবাসীর জন্য এই একটি মাত্র সংযোগ রাস্তা ৷
গ্রামবাসীরা জানান, অন্য সব জায়গাতে উন্নয়নের ছোয়া লাগলেও এই রাস্তাটির উন্নয়ন কখনই হয়নি ৷ গ্রামবাসীরা নিজস্ব উদ্যোগে অনেক আগে ইটের সোলিং করেছিলো ৷ তবে কালক্রমে তা নষ্ট হয়ে গেছে ৷ তার উপর সদ্য খনন করা রেকর্ডিয় খালে ভাঙ্গনের কারনে রাস্তার কিছু কিছু স্থানের অনেকাংশই নদীগর্ভে বিলীন ৷ এখন একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাটুজল আর কাদা মাখামাখি হয়ে যায় ৷ রাস্তার অনেক অংশই এখনও পানির নিচে তলিয়ে আছে ৷ লোকজন বাজার সদয় ও পানি নিয়ে সেখান ঝুঁকিপূর্নভাবে চলাফেরা করছেন ৷ রাস্তার ঠিক মধ্যভাগে এমনভাবে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে যে জোয়ারের সময় রাস্তার ওই অংশ সম্পূর্ন ডুবে যায় ৷ তখন সেখানে পারাপারের একমাত্র মাধ্যম একটি নৌকায় পার হতে হয় ৷ এমনিতেই প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধে টিকে থাকতে হয় সুন্দরবনের উপকূলবর্তী রামপালের বাসিন্দাদের ৷ সম্প্রতি ঘূর্নিঝড় আমফানেও এখানে পানির স্তর বেড়ে বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছিলো ৷ যারা এই এলাকার দিনমজুর ভ্যানচালক এই রাস্তাটি তাদের কাছে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে ৷
মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এই গ্রামে ৩/৪ হাজার লোকের বাস ৷ আমাদের এখান থেকে খানিকটা দুরে সপ্তাহে বাজার বসে ৷ এই রাস্তার কারনে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার করে চলাচলে ব্যাপক সমস্যা হয় ৷ মসজিদ ,মাদ্রাসা বিদ্যালয়ে যাতায়েত করতে এবং পানি আনতে গেলে আমাদের একরকম পানিতে সাতার কেটে যাওয়া লাগে ৷ তিনি দ্রুত এই রাস্তাটির বাস্তবায়নের জন্য কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ৷
ওই এলাকার প্রাথমিক স্কুল পড়ুয়া একাধিক শিক্ষার্থী জানান, এই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে গেলে তাদের একপ্রকার ভিজে যাওয়া লাগে ৷ রাস্তাটির সংস্কারের দাবী জানান তারা ৷
এছাড়া শেখ আবু তাহের,ইসমাইল হোসেন,তৈয়েব,মোসলেম মল্লিক,আনিছ মল্লিক,আবু হান্নান সহ আরো ২০/৩০ গ্রামবাসী বলেন, রাস্তার কারনে মহিলারা একরকম বাড়ি থেকে বের হতে পারেনা ৷ বর্ষাকালে এলাকার ছেলেমেয়েরা স্কুল কলেজে যাতায়েত করতে পারে না ৷ রাস্তাটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য রামপালের সংসদ সদস্য এবং বন পরিবেশ ও জলবায়ু উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তারা৷
রাস্তার বিষয়টি নিয়ে বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই রাস্তাটির ব্যাপারে আমি নিজে অবগত আছি এবং কয়েকবার পরিদর্শনে গিয়েছি ৷ তবে এই রাস্তার জন্য যে ফান্ড প্রয়োজন তা আমার ইউনিয়ন পরিষদের নেই ৷ বিষয়টি আমি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আ. খালেক ও বন পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার মহোদয়কে অবগত করেছি ৷ আপাতত চলার জন্য যদি কোনো ফান্ড লাগে তাও আমি ব্যাক্তিগতভাবে দেয়ার কথা বলেছি ৷ বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদে এই রাস্তার জন্য কোনো ফান্ড নেই ৷ আমি রাস্তার জন্য সর্বাত্নক চেষ্টা করবো ৷
রামপাল উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলজার হোসেন জানান, এই মূহূর্তে আমাদের রানিম কোনো প্রকল্প নেই ৷ যদি প্রকল্প আসে তখন আমরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে এই রাস্তাটি করে দিতে পারবো ৷ আপাতত উপজেলা পরিষদ থেকে সেখানে ইট সোলিং রাস্তা করা যেতে পারে ৷