পরিবেশ অধিদপ্তরের নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে বিপাকে ৫০০ পাথর ব্যবসায়ী
পরিবেশ অধিদপ্তরের কয়েক কোটি টাকার পাথর নিলামের বিজ্ঞপ্তি পেয়ে বিপাকে পড়েছেন সিলেটের ৫শ’ স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী।
গত ১৭ জুলাই বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পর হতাশা হয়েছেন লোভাছড়ার পাথর ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনায় প্রাদুর্ভাবে আয়- রোজগারের সকল পথ বন্ধ থাকায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে আছে। এ অবস্থায় সর্বস্ত্র দিয়ে বিনিয়োগ ব্যবসাটি যদি নিলামে আসে তবে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় থাকবেনা বলে জানান সংবাদ সম্মেলনে সিলেটের লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ীর সংশ্লিষ্টরা।
রোববার (১৯ জুলাই ) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী নাজিম উদ্দিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৭ জুলাই পাথর নিলামের সরকারি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই কোটি কোটি টাকার নিলামের পাথর কানাইঘাটের লোভাছড়া আদর্শ পাথর ব্যবসায়ী সমিতি লি. ও মূলাগুল পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি. এর। গেল বছর নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত লোভাছড়ার পাথর উত্তোলন হয় এবং মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নৌপথে তা অপসারণ করা হয়। এ বছরের শুরুতে বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনার তান্ডবে বাংলাদেশেও মার্চ থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে দেশের সরকারও সাধারণ ছুটি ঘোষণা শুরু করেন। এ অবস্থায় মে মাসে নদীতে পানি এলেও পাথর অপসারণ সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি সরকার দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছিলেন, কিন্তু করোনা আতংকে শ্রমিকের সংকট দেখা দেয়ায় সব পাথর সরানো সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, যেখানে পাথর সংরক্ষিত আছে প্রায় ২০ কোটি টাকার। পাথর অপসারণে প্রচুর টাকা খরচ করে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার পরপরই পরিবেশ অধিদপ্তর ১৭ জুলাই পাথর নিলামের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এতে ব্যবসায়ীদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। করোনার কারণে আমাদের কোন আয় রোজগার নেই, এ অবস্থায় জমি-গহনা বিক্রি করে বিনিয়োগ করা টাকায় কেনা পাথর যদি নিলাম হয়, তাহলে ৫শ’ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে পথে বসতে হবে।
এমনকি ব্যাংক ঋনের টাকা পরিশোধ করাও আমাদের সম্ভব হবেনা বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, লোভাছড়া পাথর কোয়ারি ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে কানাইঘাটের জুলাই গ্রামের মস্তাক আহমদ পলাশ চার কোটি ৩৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছিলেন। পরবর্তিতে সেখানে দুইটি সমিতির ৫শ’ স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ীরা পাথর ব্যবসায়ী পলাশের কাছ থেকে ইজারার মেয়াদের ভিতরে প্রায় একশো একর ভূমিতে সরকারি রশীদ মূলে পাথর কিনে স্তুপ গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে পলাশের ইজারার মেয়াদ শেষ হলেও স্তুপকৃত পাথরের মালিক সিলেটের ৫শ’ পাথর ব্যবসায়ী।