এন-৯৫ মাস্ক দুর্নীতিতে দুদকে ডাক পাচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তার ছেলে
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের পদত্যাগের পর এবার আলোচনায় এসেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহেদ মালেক। দেশজুড়ে তার পদত্যাগের দাবির মধ্যেই নতুন করে আলোচনায় এসেছে এন-৯৫ মাস্ক দুর্নীতিতে তার সংশ্লিষ্টতার কথা। শুধু তাই নয় এই কান্ডে এবার আলোচনায় আছেন মন্ত্রীপুত্র রাহাত মালেক শুভ্রও।
জানা গেছে, এই দুর্নীতির অভিযোগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তার ছেলে রাহাত মালেক শুভ্রকে তলব করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। কমিশন স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করছে। সেই তদন্তের প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার ছেলেক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিমত দিয়েছেন। কমিশন এই অভিমতের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে। এই প্রেক্ষাপটেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং তার ছেলেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে তলব করা হচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে কখন ডাকা হবে সে ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদউল্লাহকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হলে তিনি জনপ্রশাসন সচিবের কাছে একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে এবং মিঠু সিন্ডিকেটসহ আরো বেশকিছু অভিযোগ করেছিলেন। সেই চিঠির কপি এখন দুদকে এসেছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। আর এসব ব্যপারে খতিয়ে দেখার জন্যই স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তার পুত্রকে ডাকা হবে বলে জানা গেছে।
আগেই এন-৯৫ মাস্ক, ভেন্টিলেটরসহ করোনা মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনাকাটা নিয়ে কেলেংকারিতে জড়িয়ে পড়েছে স্বাস্থ্যপুত্র রাহাত মালেক শুভ্রের নাম। এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে তীব্র সমালোচনাো হয়েছে।
জানা গেছে, এন ৯৫ মাস্ক নিয়ে যে কেলেঙ্কারি হয়েছে, জিএমআই নামে যে কোম্পানিটি এই মাস্ক সরবরাহ করেছিল, সেই কোম্পানি বিনা টেন্ডারে ভূয়া এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহ করেছিল। এই কোম্পানিটির সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পুত্রের যোগসাজশের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
দুদক সূত্র বলছে, এন ৯৫ মাস্ক রিজেন্ট-জেকেজির মতো স্বাস্থ্যখাতে যে সমস্ত অনিয়ম এবং দুর্নীতি হয়েছে তা নিয়ে দুদক তদন্ত করছে। এই তদেন্তর অংশ হিসেবেই দুদক স্বাস্থ্য অধিদপ্তের তল্লাশি চালায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিদায়ী মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদকে দুই ঘন্টা রুদ্ধদ্বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই প্রেক্ষিতেই মন্ত্রী ও তার পুত্র রাহাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে দুদক সূত্র নিশ্চিত করেছ।
এ ব্যাপারে আইনের কোনো ব্যত্যয় আছে কিনা জানতে চাইলে দুদকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিউইয়র্ক মেইলকে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন যেকােনো ব্যক্তিকেই ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। এই ক্ষমতা দুর্নীতি দমন কমিশনের রয়েছে। তিনি বলেন, শুধু করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে কেনাকাটা নয় বরং আগে থেকেই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলেকে নিয়ে তারা তদন্ত করছিলেন। এই তদন্তের অংশ হিসেবেই সাবেক এপিএস ড. আরিফুর রহমান শেখকে দুদকে তলব করা হয়েছিল গত জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে। সে সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পুত্রের ব্যাপারে তাকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।