শিরোনাম
পাকিস্তানের কাছে ৪.৩২ বিলিয়ন ডলার ন্যায্য হিস্যা চাইলো বাংলাদেশ বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অধিকার হারাতে পারে হার্ভার্ড গিনিতে ফুটবল ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১০০ নিহত ট্রান্সজেন্ডাররা নয়, শুধু জন্মগত নারীরাই নারী: ব্রিটিশ আদালতের রায় ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা দক্ষিণী নির্মাতার হাত ধরে খলনায়ক হয়ে ফিরছেন শাহরুখ ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর ডোমিনিকায় নাইটক্লাবের ছাদ ধসে নিহত বেড়ে ৯৮ নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 5 October, 2020 01:26

আলোচনায় ‘রঞ্জিত-আজাদ’

আলোচনায় ‘রঞ্জিত-আজাদ’
অমিতা সিনহা :

ওরা একই মেরুর বাসিন্দা। একই সুত্রে গাঁথা। যদিও বর্তমান চলার পথ কিছুটা ভিন্ন। যদিও সে পথ আলোর নয়, বরং অপতৎপরতার। শ্রীহট্টের সুনিবিড় ঐতিহ্যের বাহক মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজ ঘিরে তাদের অপরাধ জগৎ। যা সিলেটের লোকমুখে পরিচিত হয়ে উঠেছে রঞ্জিত-আজাদের অপরাধের স্বর্গরাজ্য ‘টিলাগড়’ হিসেবে। 

গত ২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের ক্যাম্পাসে সংগঠিত ঘৃণ্য ঘটনার সূত্র ধরে ফের আলোচনায় এসেছে সিলেট আওয়ামী লীগের এই আলোচিত-সমালোচিত নাম দুটি। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেটের প্রভাবশালী  আওয়ামীলীগের নেতা রঞ্জিত সরকার ও আজাদুর রহমান আজাদ ওরা দু’জনই এক সময় খুবই প্রিয় মিত্র ছিলেন। এক সাথে সিলেটের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে বেশ চাঙা করে মাঠ চষে ছাত্রজীবনও কাটিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ আজাদুর রহমান আজাদের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা  সিলেট সিটি কর্পোরেশন তৎকালীন ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাজ্জাদুর রহমান সাজুর মৃত্যুতে পরিবারের হয়ে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়ে জনপ্রতিনিধি বনে যান। এরপর থেকে একের পর এক সিলেটে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হয়ে বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে আনেন আজাদ। অন্যদিকে মিত্র রঞ্জিত সরকার সিলেটের রাজনৈতিক সাথে সম্পৃক্ত কলেজগুলোতে নিজ দাপটের বলে গড়ে তোলেন বৃহত্তর রঞ্জিত গ্রুপ। সিলেটের আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার মূলবাড়ি সিলেট সদরের বৃহত্তর শিবগঞ্জের টিলাগড়ে। তাই ওরা দু’জনই  নিজ শক্তি ধরে রাখতে  এমসি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বেশ প্রভাব রয়েছে। 

কাউন্সিলর বনে গিয়েও ছাত্র রাজনীতি ছেড়ে দেননি আজাদ। এর ফলে এই দুই মিত্রের গ্রুপের অভ্যন্তরে  আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ চলতো টিলাগড়ে।  সিলেটের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আস্তানা ‘টিলাগড়’ তাই  রঞ্জিত- আজাদের অপরাধের স্বর্গরাজ্য বলে লোকমুখে পরিচিত হয়ে উঠে। সিলেটের ছাত্র রাজনীতির অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কোন্দলের হিসেব-নিকেষ করে দেখা যায়।

২০১০ সাল থেকে ২০১৮সালের মধ্যে সিলেট আওয়ামী লীগের নেতা আজাদুর রহমান আজাদ ও রঞ্জিত সরকারের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে প্রাণ হারান  ছাত্র - উদয়েন্দু সংহ পলাশ, জাকারিয়া মোহাম্মদ মাসুম, ওমর মিয়া, তানিমসহ আরও একজন ছাত্র। যার একটিও কোন বিচার সুস্থ্যভাবে সম্পন্ন হয়নি। আর ২০১২সালের ৮ জুলাই এমসি  কলেজের ছাত্রাবাসে  ছাত্রশিবির তাড়াতে গিয়ে আগুনে পুড়ে দিয়েছিল ছাত্রাবাসের ৪২টি কক্ষ ছাত্রলীগ। যার সুস্থ্য বিচার আট বছরেও সম্পন্ন হয়নি। এতে করে দুষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মীরা একের পর এক পার পেয়ে গিয়ে আরও জোরালোভাবে মাথাছাড়া হয়ে উঠেছে অপরাধ জগতে। 

টিলাগড়সহ বিভিন্ন স্থানে অপরাধ কর্মে আসক্ত হয়ে ভেঙে পড়েছে ছাত্র সমাজ এমনি মনে করেন সচেতন মহল। সর্বশেষ এই প্রিয়  দুই মিত্র এক হয়েছিল সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২০১৮ সালে। ওই বছর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২০নং ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন দল প্রত্যাশী ছিলো। কিন্তু সে বছর বর্তমান কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ কোন জনসংযোগ করেনি সিলেট আওয়ামী লীগের দল থেকে অধিক বড় পদের আশায়। যার কারণে ২০নং ওয়ার্ডে নতুন তরুণ পদ প্রার্থীদের সরব ছিলো তুঙ্গে। পরে তিনি তারই মিত্র রঞ্জিত সরকারের সহযোগীতায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন। এর পর থেকে ওদের দুজনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন দ্বন্দ্ব কিংবা সংঘর্ষ কারো নজরে আসেনি। 

এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনায় ৬ ছাত্রলীগ কর্মী রঞ্জিত গ্রুপের কর্মী ছিল। দুষ্কৃতদের ধরতে ছাত্রাবাসের অভিযানের চলাকালে বিভিন্ন কক্ষ থেকে  দেশি-বিদেশি অস্ত্র  উদ্ধার করেন পুলিশ ও র‌্যাব। যার চাক্ষুষ প্রমাণ পেয়েছেন ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়া সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পদক  মিহিত গুহ চৌধুরী বাবলা।  কিন্তু তার এই অভিযোগ  নাকচ করেছেন সিলেট আওয়ামী লীগের নেতা রঞ্জিত সরকার ও আজাদুর রহমান আজাদ। ওরা দু’জনই সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বহুবছর আগেই ছাত্র রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। তাই তারা এখন আর ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত নন। দু’জনই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার আলোকিত দেশ গড়ার কাজ করেন। তারই  লক্ষ্যে  দল ও দেশকে এগিয়ে  নিয়ে যাচ্ছেন। ছাত্র রাজনীতিতে নন।  

উপরে