শিরোনাম
সব প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপে তৎপর ভারতীয় আমেরিকানরা টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের প্রথমবারের মতো ইউক্রেনে রাশিয়ার আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর গাজায় ১০০ ট্রাক ত্রাণ লুট করে নিল মুখোশ পরিহিতরা নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 12 June, 2022 01:34

পাচার করা অর্থ ফেরানোর সুযোগের বিরোধিতায় ‘ব্যবসায়ীরা’

পাচার করা অর্থ ফেরানোর সুযোগের বিরোধিতায় ‘ব্যবসায়ীরা’
ঢাকা অফিস :

চলমান বৈশ্বিক বিপর্যয়ের মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেট অত্যন্ত সময়োপযোগী। তবে বাজেট বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সুশাসন, যথাযথ মনিটরিং, বিনিয়োগ ও উৎপাদন বৃদ্ধি এবং রাজস্ব আদায় করা হলো বড় চ্যালেঞ্জ। 

এ ছাড়া দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা আগামী বাজেট বাস্তবায়নে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও তদারকির মান উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনা নিশ্চিত করতে হবে। বাজেটে পাচার করা অর্থ ফেরানোর সুযোগ দেওয়া মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ পাচার করা অর্থ ফেরানোর সুযোগ সৎ ব্যবসায়ীদের নিরুৎসাহিত করবে। 

শনিবার বাজেটপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এসব অভিমত প্রকাশ করে।

মতিঝিলের এফবিসিসিআই ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি জসিম উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি সাইফুল ইসলাম। 

লিখিত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, কোভিড ও ইউক্রেন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি, খাদ্যপণ্য, পণ্যের কাঁচামালের মূল্য এবং জাহাজ ও পরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় সব ধরনের দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা আগামী বাজেট বাস্তবায়নে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। 

‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অনুৎপাদনশীল এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ খরচ কমানোর পাশাপাশি বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্য অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা বিনিয়োগ, শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে।’

ঘাটতি প্রসঙ্গে জসিম উদ্দিন বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে যথাসম্ভব স্বল্প সুদে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়নের চেষ্টা করা উচিত। কেননা ব্যাংক ঋণের ওপর অধিক মাত্রায় নির্ভরতা বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। 

করপোরেট কর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে, যা প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। তবে অগ্রিম আয়কর ও আগাম কর বিদ্যমান থাকায় এ কর সুবিধা ব্যবসায়ীদের জন্য তেমন সুফল বয়ে আনবে না। কারণ অগ্রিম আয়কর ও আগাম কর সমন্বয় করা হয় না। করপোরেট কর না কমিয়ে এগুলো উঠিয়ে দিলে ভালো হতো। এছাড়া আয়করের মূল নীতির সঙ্গে অগ্রিম আয়কর সাংঘর্ষিক। 

উৎসে কর বাড়ানোয় রপ্তানি খাত ধাক্কা খাবে মন্তব্য করে জসিম উদ্দিন বলেন, যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে মন্দা চলছে। ওয়ালমার্ট, কসকো ও গ্যাপের মতো প্রতিষ্ঠান পণ্য বিক্রি করতে পারছে না। এ অবস্থায় উৎসে কর বাড়ানোয় রপ্তানি খাত প্রতিযোগী সক্ষমতা হারাবে। ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়েরসীমা ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয়, মূল্যস্ফীতি ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় আয়করের সীমা পুনর্বিবেচনা করা উচিত। প্রতিবেশী দেশ ভারতে এ সীমা ৫ লাখ রুপি। 

খেলাপি ঋণ ও ঋণের সুদ মওকুফের ওপর করারোপের বিষয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, খেলাপি ঋণ মওকুফ করা হলে তা করযোগ্য আয় হিসাবে গণ্য করা হবে কেন? দুর্ভোগ লাঘবের জন্যই খেলাপি ঋণ মওকুফ করা হয়। তাই মওকুফ করা ঋণের ওপর কর আরোপ করা যুক্তিযুক্ত নয়। যে মরে গেছে সে ট্যাক্স দেবে কোত্থেকে। 

কোম্পানির সুদ আয়ের ওপর উৎসে কর দ্বিগুণ করায় ছোট কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে- এমন মন্তব্য করে জসিম উদ্দিন বলেন, ছোট কোম্পানিগুলো নিরাপত্তার জন্য এফডিআর করে। এ অবস্থায় ২০ শতাংশ উৎসে কর আদায় করলে কেউ আর ব্যাংকে টাকা রাখতে উৎসাহিত হবে না। বালিশের নিচে, মাটির নিচে টাকা রাখবে। আর পাচারও করে দিতে পারে। এ বুদ্ধি (করারোপ) কে দিয়েছে তা জানা দরকার। 

পাচার করা অর্থ ফেরানোর সুযোগকে সমর্থন করেন কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে জসিম উদ্দিন বলেন, পাচার করা টাকা ফেরানোকে সমর্থন করি না। এতে মানুষ টাকা পাচার করতে উৎসাহিত হবে। এখন একজন ব্যক্তিকে ২৫ শতাংশ আয়কর দিতে হয়, আর টাকা ফেরালে মাত্র ৭ শতাংশ করা দিতে হবে। ১৮ শতাংশ কর ছাড় দেওয়ায় সৎ ব্যবসায়ীদের নিরুৎসাহিত করবে। হয়ত সরকার ডলার সংকটে এ সুযোগ দিয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা এটা সমর্থন করেন না। 

বাজেট ব্যবসাবান্ধব হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে জসিম বলেন, বাজেটে ব্যবসায়ীদের দাবির অনেক প্রতিফলন ঘটেছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত আছে। দ্বিমতের বিষয়গুলো আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। 

এক প্রশ্নের উত্তরে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, আদায় কার্যক্রম মনিটরিং করতে কর কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। অসহযোগিতার জন্য ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, এতে হয়রানি অবশ্যই বাড়বে। এটি বিচার ব্যবস্থার বহির্ভূত কাজ। কেউ কর ফাঁকি দিলে প্রচলিত আইনেও প্রয়োজনে জেল-জরিমানা দিতে পারে।

উপরে