শহীদ স. ম আলাউদ্দীনের অবিনাশী চিন্তা ও চেতনা আলো ছড়াবে যুগ থেকে যুগান্তরে
মেইল ডেস্ক: দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা স. ম আলাউদ্দীনের অবিনাশী চিন্তা ও চেতনা আলো ছড়াবে যুগ থেকে যুগান্তরে, কাল থেকে কালান্তরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। এমনই আশা জাগানিয়া প্রত্যয় ব্যক্ত করে শনিবার (২৪ জুন) অনুষ্ঠিত হয়েছে দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা স. ম আলাউদ্দীনের ২৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা।
আলোচনা সভায় বক্তারা তুলে ধরেন দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা স. ম আলাউদ্দীনের জীবন ও কর্মের আলোকিত নানা দিক।
বক্তারা আরো বলেন-ঊষার দুয়ারে আঘাত হেনে দৈনিক পত্রদূতের অরুণ প্রাতের তরুণ দল এগিয়ে যাবেই। কোন অপশক্তির ভয়-ভীতির কাছে মাথা নোয়াবে না দৈনিক পত্রদূতের সত্যের সৈনিকরা। তিমির রাতের বাঁধা পেরিয়ে নব-নবীনের গান গেয়ে স. ম আলাউদ্দীনের নীতি, আদর্শ ও কর্মকে ছড়িয়ে দিয়ে দুয়ারে দুয়ারে জীবনের আহ্বান জানাবে তারা।
সাতক্ষীরার তুফান কনভেনশন সেন্টারে (লেকভিউ) অনুষ্ঠিত হয় ওই আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় দৈনিক পত্রদূত পরিবারের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, যৌবনের দুর্নিবার আকর্ষণকে উপেক্ষা করে একজন এমএলএ হয়েও সরাসরি অস্ত্র হাতে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলেন স. ম আলাউদ্দীন। তিনি ছিলেন একজন তুখোড় সৎ ও স্বচ্ছ রাজনীতিক, একজন দক্ষ সংগঠক, একজন আদর্শ শিক্ষক, একজন নিবেদিত মানবতার সেবক, একজন মুক্তিকামী বিপ্লবী যোদ্ধা, একজন কবি, একজন গীতিকার, একজন অভিনেতা, একজন সুবক্তা, একজন সমাজ সংস্কার লেখক, একজন সুচিন্তক, একজন ব্যবসায়ী, একজন শিক্ষাবিদ ও একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ।
তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি কবিতা লিখতেন, গান লিখতেন। তার কবিতা সাতক্ষীরার ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। স. ম আলাউদ্দীন ছিলেন একজন অভিনেতা। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘জয় বাংলা’ সিনেমায় অভিনয় করে স্বাধীনতাকামী মানুষকে উদ্দীপ্ত করেছেন। তার অভিনয় ও বক্তব্য যুব সমাজকে দেশ প্রেমে উদ্দীপ্ত করে। স. ম আলাউদ্দীন ছিলেন একজন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি স. ম আলাউদ্দীনের শিক্ষা ভাবনা ছিল অনন্য। কারিগরি শিক্ষার রূপরেখা নিয়ে আজ থেকে ৩০ বছর আগে তাঁর ভাবনা আজকের প্রেক্ষাপটে বাস্তব। তিনি বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করে সেই রূপরেখা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর যদিও বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল এন্ড কলেজে সেই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়নি। কিন্তু তার সেই চিন্তার একটি অংশ অনেক প্রতিষ্ঠানে পরবর্তীতে কার্যকর হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একজন নির্ভেজাল কর্মী ছিলেন তিনি। যে কারণে পাকিস্তান সামরিক আদালত তাকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড, সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও ধরিয়ে দিতে পারলে ৪০ হাজার রূপি পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি সেনাবাহিনীতেও কমিশন্ড অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এ অঞ্চলে তিনি ক্যাপ্টেন সাইফুল্লাহ (ছদ্মনাম) নামে যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন। যেসব তথ্য স.ম আলাউদ্দীন স্মারকগ্রন্থ “দীপ্ত আলাউদ্দীন” প্রকাশের পর সামনে এসেছে। এসব বিষয়ে আরো তথ্য সংগ্রহে পত্রদূত এর সংবাদ কর্মীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের আহবান জানানো হয়।
বক্তারা আরো বলেন, স. ম আলাউদ্দীন সাতক্ষীরার কৃষি, শিক্ষা, শিল্প, পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াত ও যোগাযোগসহ সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন। তিনি ভোমরাকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে পরিণত করার জন্য দেশ-বিদেশে যোগাযোগ করেছিলেন বলেই ভোমরা আজ দেশের অর্থনীতির খোলা জানালায় পরিণত হয়েছে। তিনি ছিলেন সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
এমনই একজন প্রতিভাবান ব্যক্তিকে ১৯৯৬ সালের ১৯ জুন রাতে গুলি করে হত্যা করেছিল সাতক্ষীরার একটি বিশেষ মহল। তাঁর হত্যাকান্ডের মধ্যদিয়ে সাতক্ষীরার উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বেঁচে থাকলে সাতক্ষীরা কৃষি, শিক্ষা, সাহিত্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াত ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে যেতে পারতো।
বক্তারা বলেন, স. ম আলাউদ্দীনের জীবন ও কর্মের উপর ‘দীপ্ত আলাউদ্দীন’ নামের একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ৮জুলাই স্মারকগ্রন্তটির মোড়ক উন্মোচনের কথা রয়েছে। স্মারকগ্রন্থটি আগামী প্রজন্মকে আলোকিত করতে ভূমিকা রাখবে। মানবীয় গুণাবলী সম্বলিত মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একজন দেশপ্রেমিক সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে স্মারকগ্রন্থটি দেখাবে আলোর পথ। বক্তারা অরুণ প্রাতের তরুণ প্রজন্মের মাঝে স. ম আলাউদ্দীনের কর্মময় জীবনালেখ্য ছড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান।
দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক পত্রদূতের উপদেষ্টা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, দীপ্ত আলাউদ্দীনের সম্পাদক শেখ তানজির আহমেদ, দীপ্ত আলাউদ্দীনের সম্পাদনা পরিষদের সভাপতি গাজী শাহজাহান সিরাজ, দৈনিক পত্রদূতের বার্তা সম্পাদক এসএম শহীদুল ইসলাম, চীফ রিপোর্টর মো. আব্দুস সামাদ, বিশেষ প্রতিনিধি নিয়াজ কওছার তুহিন, এড. খায়রুল বদিউজ্জামান, দৈনিক পত্রদূতের সহকারী সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্যাহ, দেবহাটা ব্যুরো প্রধান মো. আব্দুল ওহাব, কলারোয়া প্রতিনিধি শেখ জুলফিকারুজ্জামান জিল্লু, তালা প্রতিনিধি মো. আব্দুল জব্বার, সুন্দরবনাঞ্চল (শ্যামনগর) প্রতিনিধি রনজিত বর্মন, আশাশুনি সংবাদদাতা আব্দুস সামাদ বাচ্চু, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি জিএম রিয়াজুল আকবার, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি আব্দুর রহিম, নিজস্ব প্রতিনিধি শেখ আব্দুল আলিম, প্রভাষক শেখ হেদায়েতুল ইসলাম, শাহজাহান কবীর, মো. হোসেন আলী, খেশরা (তালা) প্রতিনিধি প্রভাষক এসআর আওয়াল।
উপস্থিত ছিলেন দৈনিক পত্রদূতের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এসএম রফিকুল ইসলাম, বিজ্ঞাপন ম্যানেজার শেখ বেলাল হোসেন, অনলাইন ইনচার্জ আসাদুজ্জামান আসাদ, সহকারী সম্পাদক সুদয় কুমার মন্ডল, কম্পিউটার অপারেটর আল মামুন স¤্রাট, নিজস্ব প্রতিনিধি প্রভাষক আরিফ মাহমুদ, মনিরুল ইসলাম মনি, ইব্রাহীম খলিল, আহাদুজ্জামান আহাদ, দীপঙ্কর বিশ্বাস, নাজমুস শাহাদাত জাকির, আব্দুর রহিম, সেলিম হোসেন, মো. জাবের হোসেন, এসএম হাবিবুল হাসান, আল মামুন, এমডি রায়হান সিদ্দিকী, পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি মো. মুজিবর রহমান, উপকূলীয় অঞ্চল (শ্যামনগর) প্রতিনিধি আব্দুল হালিম, দেবহাটা সংবাদদাতা আজিজুল হক আরিফ, সীমান্ত প্রতিনিধি আসাদুল হক, খলিষখালি (তালা) প্রতিনিধি শাহীন আলম, কেঁড়াগাছি (কলারোয়া) প্রতিনিধি অহিদুজ্জামান খোকা, মুন্সিগঞ্জ (শ্যামনগর) প্রতিনিধি পিযুষ বাউয়ালিয়া পিন্টু, পারুলিয়া দেবহাটা) প্রতিনিধি অধ্যাপক রাজু আহমেদ, বুধহাটা (আশাশুনি) প্রতিনিধি মো. আব্দুর রব, কৃষ্ণনগর (কালিগঞ্জ) প্রতিনিধি আফজাল হোসেন, রমজাননগর (শ্যামনগর) প্রতিনিধি মো. আক্তার হোসেন, ধুলিহর (সদর) প্রতিনিধি জিএম আমিনুল হক, কৈখালি (শ্যামনগর) প্রতিনিধি মো. মনির হোসাইন, সাংবাদিক শামীম রেজা, এসএম বিপ্লব হোসেন, মৃত্যুঞ্জয় রায় প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দৈনিক পত্রদূতের বার্তা সম্পাদক এসএম শহীদুল ইসলাম। সূত্র: দৈনিক পত্রদূত