মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের প্রস্তুতি নিচ্ছে রুশ রণতরী
সিরিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের প্রস্তুতি নিচ্ছে রুশ যুদ্ধজাহাজগুলো। সম্ভাব্য মার্কিন হামলা প্রতিরোধ ও পাল্টা জবাব দিতে সিরিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাটি থেকে যুদ্ধজাহাজগুলোকে সুবিধাজনক অবস্থানে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুশিয়ারির পরই যুদ্ধজাহাজগুলো সরিয়ে নেয়া হয়। স্যাটেলাইটের ছবি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে ডেইলি মেইল।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে পত্রিকাটি জানায়, ভূমধ্যসাগরের সিরিয়ার উপকূলে দেশটির তারতুস সামরিক বন্দরে মোতায়েন ছিল রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ অ্যাডমিরাল গ্রিগরোভিচসহ ১১টি যুদ্ধজাহাজ।
বুধবার স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা যায়, তারতুস বন্দর থেকে যুদ্ধজাহাজগুলো সরে গিয়ে ভূমধ্যসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। স্যাটেলাইটের ছবিতে আরও দেখা যায়, বন্দরটিতে মোতায়েন রাখা হয়েছে কিলো শ্রেণীর একটি সাবমেরিন।
যুদ্ধজাহাজগুলোর প্রতিরক্ষায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে মস্কোর অপ্রতিরোধ্য ও ভয়ঙ্কর এস-৩০০ ও এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। গত এক বছর ধরে এগুলো সিরিয়ার উপকূলে মোতায়েন রাখা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত মঙ্গলবার সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য রাশিয়াকে প্রস্তুত থাকার জন্য হুশিয়ারি দেন। এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, প্রস্তুত থাকো রাশিয়া। সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র আসছে।
এর পাল্টা জবাবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সিরিয়ায় মার্কিন যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হবে এবং একই সঙ্গে যেখান থেকে হামলা চালানো হবে পাল্টা সেখানে আঘাত হানা হবে। এর একদিন পরেই ভূমধ্যসাগরে নিজেদের যুদ্ধজাহাজগুলোকে উপযুক্ত স্থানে মোতায়েন করে মস্কো।
সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দৌমা শহরে রাসায়নিক হামলার অভিযোগে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের চিন্তা-ভাবনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্র যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স।
রাসায়নিক হামলার জন্য আসাদ বাহিনীকে দায়ী করছে পশ্চিমারা। অন্যদিকে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সিরিয়া সরকার ও তার অন্যতম দুই মিত্র রাশিয়া ও ইরান। ভিত্তিহীন এ অভিযোগে সিরিয়ায় হামলা চালানো হলে তার উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছে দেশ দুটি।
এদিকে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের সম্ভাব্য সামরিক আগ্রাসনের আশঙ্কায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি রুশ বাহিনী। আসাদের সুরক্ষায় এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ‘দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা বলয়’ গড়ে তুলেছে রাশিয়া।
এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভয়ে কাঁপছে যুক্তরাষ্ট্র। মস্কোর এই অপ্রতিরোধ্য সামরিক প্রযুক্তি ২৪৮ মাইল দূর থেকেও একবারে ৮০টি বিমান ধ্বংস করতে সক্ষম। এ কারণেই এটাকে বলা হচ্ছে ‘বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অস্ত্র’।
প্রতিপক্ষের মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধবিমান, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক মিসাইলও ধ্বংস করতে সক্ষম এটা। ভূমিতেও যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল আঘাত হানতে পারে বলে এর খ্যাতি রয়েছে।
রাশিয়ার সীমান্তজুড়ে মোতায়েন রয়েছে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। দেশের বাইরে ২০১৫ সালে সিরিয়ার একটি ঘাঁটিতে প্রথম মোতায়েন করা এটা। ডেইলি মেইল জানায়, এস-৪০০-এর আঘাত থেকে বাঁচতে সিরিয়ায় নিরাপদ দূরত্ব থেকে হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের বিমানগুলো।
তবে রাশিয়ার হাতে রয়েছে সুখোই সু মডেলের অগণিত যুদ্ধবিমান। এস-৪০০-এর হাত থেকেও বাঁচলেও সুখোই সুর হাত থেকে রেহাই নেই পশ্চিমা যুদ্ধবিমানগুলোর।