পরমাণু সাবমেরিন থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করলো রাশিয়া
সাবমেরিন থেকে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালালো রাশিয়া।
মঙ্গলবার শ্বেতসাগরে অবস্থানরত পরমাণু শক্তিচালিত একটি সাবমেরিন থেকে এ পরীক্ষা চালানো হয়। রুশ সামরিক সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে।
প্রজেক্ট ৯৫৫ বোরেই শ্রেণির কৌশলগত ইউরি দোলগোরুকি সাবমেরিন থেকে চারটি বুলাভা আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়। রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের কামচাটকা উপদ্বীপের কুরা রেঞ্জে পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আঘাত হানে। এ ধরনের সাবমেরিন থেকে এই প্রথম রাশিয়া কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করলো।
রুশ বার্তা সংস্থা ইতার তাস জানিয়েছে, মঙ্গলবারের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে একথা নিশ্চিত হয়েছে যে, প্রজেক্ট ৯৫৫ বোরেই কৌশলগত সাবমেরিন ও বুলাভা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।
আর-৩ বুলাভা হচ্ছে রাশিয়ার সমুদ্রভিত্তিক আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র যা ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে রুশবাহিনীতে যুক্ত হয়।
এ ক্ষেপণাস্ত্র একই সঙ্গে ছয়টি ওয়ারহেড বহন করতে পারে এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম।
উল্লেখ্য, ব্যালিস্টিক মিসাইল হল সেই সব ক্ষেপণাস্ত্র, যারা শুধু ছুঁড়ে দেয়ার সময়ের ধাক্কাতেই গোটা পথ চলে না। বন্দুকের গুলি বা কামানের গোলা ছোটে কেবল ছুঁড়ে দেওয়ার ধাক্কাতে।
ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রথম ধাক্কায় উঁচুতে ওঠে আকাশপানে। তার পর দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয় পৃথিবীর আবহমণ্ডল থেকে বেশি উচ্চতায়। তখন ওই ক্ষেপণাস্ত্র চলে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিতে। এভাবে অনেকটা দূরত্ব অতিক্রম করার পর তা নেমে আসে পৃথিবীর দিকে। প্রথমে বায়ুমণ্ডল ভেদ করে কোনাকুনি ঊর্ধ্বগতি, তার পর মাধ্যাকর্ষণ-নির্ভর দীর্ঘ পথ, অবশেষে ফের বায়ুমণ্ডল ভেদ করে ভূপৃষ্ঠে লক্ষ্যস্থানে অবতরণ মোট পথের এই তিন ভাগ থাকে ব্যালিস্টিক মিসাইল’র।
প্রথম দিককার মিসাইলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল এ -৪।এটি ভি -২ নামেও পরিচিত। ১৯৩০ ও ১৯৪০ -এর দশকে ভি -২ এর আধুনিকায়নে ভূমিকা রেখেছে নাৎসি জার্মানি। এতে নির্দেশকের ভূমিকা ছিল জার্মানির এরোস্পেস ইন্ঞ্জিনিয়ারিং ও স্পেস আর্কিটেক্ট ভের্নহার ভন ব্রাউন।
ভি -২ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় ১৯৪২ সালের ৩ অক্টোবর। ১৯৪৪ সালের ৬ অক্টোবর প্যারিসে এটি নিক্ষেপ করা হয়। এর দু 'দিন পর নিক্ষেপ করা হয় লন্ডনে।