বিশ্বকে নৌশক্তি দেখাল পুতিন
নৌবাহিনী দিবসে নিজেদের নবগঠিত নৌশক্তির জোরালো প্রদর্শন করেছে রাশিয়া। বিশেষ করে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবার পর থেকেই রুশ নৌশক্তির আধুনিকীকরণে মনোযোগী হয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তার প্রেক্ষিতেই এবারের নৌ দিবসে ৪০ টি রাশিয়ান যুদ্ধ জাহাজ এবং ৪ হাজার নাবিক নৌ দিবসের মহড়ায় অংশগ্রহণ করেন।
নেভা নদীতে অনুষ্ঠিত এই নৌশক্তি প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে রুশ নৌ বহরের সর্বাধুনিক ফ্রিগেট অ্যাডমিরাল গরশকভ, সর্বাধুনিক গোয়ান্দা তথ্য সংগ্রহকারী জাহাজ আইভান খুরশ, পরমাণু শক্তিচালিত ওরিয়ল শ্রেণীর আধুনিক সাবমেরিন এবং রাশিয়ার একমাত্র বিমানবাহী রণতরী অ্যাডমিরাল কুজনেস্তভ।
প্রতি বছরের জুলাই মাসের শেষ রোববার পালিত হয় রাশিয়ান নৌবাহিনী দিবস। পৃথিবীর অন্যতম ঐতিহ্যবাহী রুশ নৌবাহিনীর জন্য বিশেষ এই দিবসটি পালনের রেওয়াজ চলে আসছে কম্যুনিস্ট সোভিয়েত শাসনামল থেকেই। আধুনিক রাশিয়ায় সমাজতন্ত্রের রমরমা না থাকলেও রয়েছে রুশ জাতীয়তাবাদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই দিবসটি উদযাপন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নেভা নদীর তীরে অবস্থিত শহর সেন্ট পিটার্সবুর্গ শহর থেকে এই মনোমুগ্ধকর মহড়া প্রত্যক্ষ করেন। এসময় হাজারো জনতা শহরটির বন্দর এলাকায় সমবেত হয়ে রুশ নৌবাহিনীর সামরিক সক্ষমতা ও বন্দরে সামরিক কায়দায় সারিবদ্ধভাবে নোঙর করে রাখা জাহাজগুলিকে প্রত্যক্ষ করেন। এসময় রুশ নৌবাহিনীর বিমানগুলি রঙ্গিন ধোঁয়া উড়িয়ে আকাশে রাশিয়ার জাতীয় পতাকার সবকটি রঙ ফুটিয়ে তোলে। এছাড়াও রুশ নৌবাহিনীর স্পেশাল নৌ কম্যান্ডো ফোর্স, মেরিন সেনা এবং অন্যান্য ইউনিটগুলি পিটার্সবার্গের রাস্তায় বিশেষ কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। এসময় তারা নিজ নিজ ইউনিট এবং রাশিয়ার জাতীয় পতাকা বহন করে।
নৌবাহিনী দিবসের প্রদত্ত ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নৌসেনাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের নৌবাহিনী ৩ শতাব্দী ধরে সফলতার সঙ্গে রাশিয়ার সার্বভৌমত্ত্ব ও জাতীয় স্বার্থের সুরক্ষা করে আসছে। রুশ নৌবাহিনী আমাদের দেশের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
‘আমাদের নৌবাহিনীর ইতিহাস এর নাবিকদের সাহসিকতা, দেশপ্রেম এবং আত্মত্যাগের ইতিহাস’ বলেন পুতিন। এরপর তিনি রুশ সেনাবাহিনীতে সংযোজিত সর্বাধুনিক নৌজাহাজ গুলিতেও প্রদর্শন করেন এবং নাবিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এসময় পুতিনের সঙ্গে রুশ নৌবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, পশ্চিমা সামরিক পর্যবেক্ষকদের বরাত দিয়ে মার্কিন বার্তা সংস্থা সিএনএন জানায়, নিজেদের নৌশক্তির বিকাশে প্রত্যাশিত অগ্রগতি অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে রাশিয়া। তাই এবারের নৌ দিবসের মহড়ায় তারা বিপুল শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে নিজেদের আধুনিকায়নের দুর্বলতাকে আড়াল করতে চেয়েছে।