ডেনমার্কে নেকাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মুখ ঢেকে আন্দোলন
ডেনমার্কে নেকাব নিষিদ্ধ আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে কয়েকশ’ মুসলিম নারী ও পুরুষ।
নিপীড়নমূলক আইনটি অধিকার লঙ্ঘন করবে দাবি করে আন্দোলনকারীরা বুধবার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের শহর হিসেবে পরিচিত রাজধানী কোপেনহেগেনের নোরেবরো’তে জড় হয়।
সেখান থেকে তারা ‘আমাদের রাস্তায় কোনও ভেদাভেদকারী নেই’ বলে স্লোগান দিতে দিতে প্রায় এক মাইল দূরের বেল্লাহোয়েজ পুলিশ স্টেশনের দিকে অগ্রসর হয়। তারা পুলিশ স্টেশনটির চারপাশে মানববন্ধন তৈরি করে।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বোরখা পরা কয়েকজন নারী জানান, আইনটির ফলে তাদের জন্য ছেলেমেয়েদের স্কুলে নিতে, কেনাকাটা করতে এবং আশেপাশের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে বাসা থেকে বের হওয়া কঠিন হবে।
নেকাব পরে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা সাবিনা নামের এক মুসলিম নারী বলেন, এই আইন আমার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। বাসার সামনে হাঁটাহাঁটি করার সময় আমার মনে হয় আমি যেন অপরাধী। আমাকে বেশির ভাগ সময় বাসার ভেতরে থাকতে হয়। আমি কেনাকাটা করার জন্যও বাইরে যেতে পারি না।
তিনি বলেন, নেকাব পরা আমার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় বিষয়। আর এটা এখন প্রতিবাদের প্রতীক। সরকার সবসময় এমন করে আমার বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছে।
এই আন্দোলনের ডাক দেয়া দেশটির বিরোধী দলের একজন মুখপাত্র সাশা অ্যান্ডারসেন আইনটি বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আইনটি আমাদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করেছে এবং পছন্দ অনুযায়ী কাপড় পরে প্রকাশ্যে আসার ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার সংকুচিত করেছে।
বোরখা নিষিদ্ধের দাবি উত্থাপনকারী ড্যানিশ পিপল’স পার্টি’র সংসদ সদস্য মার্টিন হেনরিকসেন বলেন, আইনটি কার্যকর হওয়াই আমি খুবই খুশি। নেকাব চরমপন্থার উৎকৃষ্ট ধরন, যা এটা ড্যানিশ সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি এটি আমাদের দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আমরা আশা করি এই আইন অন্য দেশগুলোকে বোরখা ও নেকাব নিষিদ্ধ করতে উৎসাহিত করবে।
উল্লেখ্য, নেকাব নিষিদ্ধ আইন লঙ্ঘনকারীকে ১০০০ ক্রোনার(১৫৬ ডলার) জরিমানা দিতে হবে। কেউ বারবার লঙ্ঘন করলে তাকে ১০,০০০ ক্রোনার(১,৫৬০ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।